অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির পর সরকারি ১৯টি দপ্তরের যত ধরনের লাইসেন্স–সংক্রান্ত সেবা আছে, সেগুলো কাগজপত্র দিয়ে করা যাবে না। অনলাইনে আবেদন করার ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় আমাদের হাতেও অস্ত্র আছে। অনলাইনে আবেদন না হলে আমাদের অর্থসচিব সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বরাদ্দ আটকে দেবেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) সিস্টেম অনানুষ্ঠানিক চালু (সফট লঞ্চিং) করা হয়েছে। রাজধানীর এক হোটেলে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান চালু হয়। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ ব্যবস্থার উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সভাপতি আবদুর রহমান খান।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে এসেছি, স্মার্ট বাংলাদেশ হয়েছে, আমরা উন্নয়নের হাইওয়েতে প্রবেশ করেছি। এ ধরনের অনেক বয়ান তৈরি করা হয়েছে। অথচ অনলাইন না থাকায় একটা থানার কাগজ হারিয়ে গেলে তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। গত ১৫ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনেক অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হলেও খরচ করা হয়নি।
বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, একটা ফাইল উঠতে ১৫ দিন লাগে। এসব সময়সীমা কমানোর পরামর্শ দেন তিনি।
একজন আমদানিকারক-রপ্তানিকারক এখন থেকে সব রকমের সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট সংগ্রহ এবং পণ্য চালান খালাসের জন্য কেবল একটি সিঙ্গেল অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত দাখিল করবেন। দাখিলকৃত তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের মাধ্যমে পণ্য চালান দ্রুততম সময়ে খালাস নিতে পারবেন। এতে সময় বাঁচবে, খরচ বাঁচবে।
২০১৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অ্যাগ্রিমেন্টে (টিএফএ) স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। চুক্তির ১০ দশমিক ৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সব সদস্যরাষ্ট্র সিঙ্গেল উইন্ডো স্থাপনের প্রচেষ্টা নেবে। এনবিআরের অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প হচ্ছে, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্প। এ প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে আমদানি-রপ্তানি কার্যধারা সহজতর হবে, ব্যবসায়ীদের ব্যয় হ্রাস পাবে। বন্দরে পণ্য চালান খালাসে কম সময় লাগবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা ও শুল্ক ফাঁকি প্রতিরোধে বিশ্বব্যাংকের ঋণসহায়তায় ২০১৭ সালে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৩৮টি দপ্তরের সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষর হয়।
মূলত দুই সিস্টেমের মাধ্যমে পুরো ব্যবস্থাটি সচল থাকবে। এই দুটি সিস্টেম হলো বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) এবং অ্যাডভান্সড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এআরএমএস)। আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক বিএসডব্লিউর মাধ্যমে নিজের কাঙ্ক্ষিত সেবার আবেদন করবেন এবং এআরএমএসের মাধ্যমে ওই আবেদনকারী যেকোনো সহায়তা নিতে পারবেন।