বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হওয়ায় প্রায়ই হ্যাকারদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় মেটা প্লাটফর্ম মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ। ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি কর্মজীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর তথ্য আদান-প্রদান করা হয় মাধ্যমটিতে। এজন্য নিজের অ্যাকাউন্ট কীভাবে হ্যাক হতে পারে ও নিরাপদ রাখা যায় সে সম্পর্কে ধারণা রাখা অত্যন্ত জরুরি। যেভাবে হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক হতে পারে—
ম্যালওয়্যার ইনস্টল
হ্যাকাররা যে সবসময় হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট সরাসরি হ্যাক করে তা কিন্তু নয়। কখনো কখনো ডিভাইসে ম্যালওয়্যার (ক্ষতিকর সফটওয়্যার) ইনস্টলের মাধ্যমে এ অপরাধ তারা করে। কি-বোর্ডে যা টাইপ করা হয়, তা হতে পারে যেকোনো বার্তা, ইউজারনেম বা পাসওয়ার্ড—সেসব কিলগার (রেকর্ডিং সফটওয়্যার) ব্যবহার করে ট্র্যাক করা সম্ভব। কিছু ম্যালওয়্যার তো হোয়াটসঅ্যাপের বার্তা পড়তে পারে এবং সেগুলো হ্যাকারদের পাঠিয়ে থাকে।
কল ফরওয়ার্ডিং স্ক্যাম
হোয়াটসঅ্যাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা মানদণ্ড হচ্ছে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (টুএফএ), যা বাইপাস বা ভাঙতে হ্যাকাররা তাদের দিকে কল রিডাইরেক্টিং করার নানা কৌশল অবলম্বন করে। এজন্য তারা ম্যান মেশিন ইন্টারফেস বা এমএমআই কোড ব্যবহার করে। যে অ্যাকাউন্ট লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় তার ব্যবহারকারী কোডটিকে সেল নম্বর বা প্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করে সাবমিট করে। এতে কল ফরওয়ার্ডিং চালু হয়ে যায় এবং হ্যাকাররা টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনের অ্যাকসেস পেয়ে যায়।
ফোনকলে লগইন কোড
অপরাধীরা সরাসরি ফোনকলের মাধ্যমেও টুএফএ লগইন কোড চাইতে পারে। লগইনের জন্য ছয় সংখ্যার টুএফএ কোড পাঠিয়ে থাকে হোয়াটসঅ্যাপ। এ মেসেজকেই হ্যাকাররা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। তারা ফোনকলের মাধ্যমে নানা যুক্তি দেখিয়ে কোডটি নেয়ার চেষ্টা করে। একবার সফল হলে হোয়াটসঅ্যাপের অ্যাকসেস তাদের হাতে চলে যায়।
ভুয়া হোয়াটসঅ্যাপ ওয়েব কিউআর কোড
হোয়াটসঅ্যাপ ওয়েব ব্যবহার করে ফোনের অ্যাপ থেকে কিউআর কোড স্ক্যান করতে হয়। হ্যাকার বা স্ক্যামাররা একই ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করে। কিউআর কোডের মাধ্যমে তারা চেষ্টা করে অ্যাকাউন্টের অ্যাকসেস নেয়ার। লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানো সম্ভব হলে অ্যাকাউন্টের দখল হ্যাকারদের হাতে চলে যাবে।
হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকিং থেকে নিরাপদ থাকার উপায়
সহজভাবে বললে যেসব কারণে হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক হতে পারে সেসব বিষয় পরিহার করে চললে নিরাপদ থাকা সম্ভব। টুএফএ কোড ব্যবহার করার সময় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। কোনোভাবেই যেন কোডটি অন্যের কাছে না যায় সেদিকে সর্বোচ্চ নজর দেয়া জরুরি। কেউ যদি ফোনকলের মাধ্যমে কোড চেয়ে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে এক্ষেত্রে হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা সর্বোচ্চ।