যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীদের জন্য আগামী রোববার থেকে অ্যাপ বন্ধের পরিকল্পনা করছে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটক। অ্যাপটির ওপর যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ এ সিদ্ধান্তের একটি কারণ হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে যদি সুপ্রিম কোর্ট নিষেধাজ্ঞাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে অ্যাপটি চালু থাকবে। মঙ্গলবার দি ইনফরমেশনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত মার্চে ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার নিম্নকক্ষ ‘হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস’ দেশটিতে টিকটক নিষিদ্ধ করতে একটি বিল পাস করে। এরপর সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মটির মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে অ্যাপটির মালিকানা ছেড়ে দেয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়। কর্তৃপক্ষ জানায়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মালিকানা হস্তান্তর করা না হলে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এপ্রিলে বিলটি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাক্ষরের মাধ্যমে আইনে পরিণত হয়। আইনে বলা হয়, জানুয়ারির মধ্যে প্লাটফর্মটি বিক্রি করতে ব্যর্থ হলে দেশটিতে টিকটক অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হবে।
তবে নতুন সিদ্ধান্ত মোতাবেক, আইন কার্যকর হওয়ার আগে টিকটক যদি যুক্তরাষ্ট্রের সব ব্যবহারকারীর জন্য অ্যাপটি বন্ধ করে দেয়, ঘটনাটি অন্যদিকে মোড় নেবে। তখন আইন অনুযায়ী, শুধু অ্যাপল বা গুগল অ্যাপ স্টোর থেকে নতুন টিকটক ডাউনলোড বন্ধ করা হবে। কিন্তু যারা এরই মধ্যে অ্যাপটি ব্যবহার করছে, তারা কিছু সময়ের জন্য এটি চালিয়ে যেতে পারবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ব্যবহারকারীরা অ্যাপটি চালু করলে একটি পপ-আপ মেসেজ দেখানোর পরিকল্পনা করছে টিকটক। ওই মেসেজ অ্যাপের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যসহ একটি ওয়েবসাইটে যাওয়ার নির্দেশ দেবে। এছাড়া কোম্পানিটি ব্যবহারকারীদের সব ডাটা ডাউনলোডের সুযোগ দেয়ার কথাও ভাবছে। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্যের একটি কপি সংরক্ষণ করা যাবে।
অ্যাপ বন্ধ করার বিষয়ে টিকটক কিংবা বাইটড্যান্সের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। তবে তারা চায় সরকার যেন এ আইন কার্যকর করা কিছুটা বিলম্বিত করে। কোম্পানির মতে, এ আইন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘন করে, যেখানে সরকারি হস্তক্ষেপ থেকে মানুষের বাকস্বাধীনতাকে সুরক্ষা দেয়া হয়েছে।
এদিকে টিকটক জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞাটি এক মাস স্থায়ী হলে ১৭ কোটি আমেরিকানের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ প্লাটফর্মটি ব্যবহার করা বন্ধ করে দেবে।