ভিডিও কল, স্ট্রিমিং ও অনলাইন মিটিংয়ের জন্য বেশ কাজের ওয়েবক্যাম। তবে গ্যাজেটটি সঠিকভাবে সুরক্ষিত করা না হলে হ্যাক হওয়ার মাধ্যমে গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। সাইবার অপরাধীরা বা অননুমোদিত ব্যবহারকারীরা ওয়েবক্যামের অ্যাকসেস নিয়ে নজরদারি চালাতে পারে। তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে এসব ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট মেকইউজঅবের প্রতিবেদনে ওয়েবক্যামের প্রাইভেসি-সংক্রান্ত কয়েকটি টিপস দেয়া হয়েছে ।
ওয়েবক্যামে কাভারের ব্যবহার
২০১৬ সালে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, মেটা প্লাটফর্মস ইনকরপোরেটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ ও সাবেক এফবিআই পরিচালক জেমস কমি গোপনীয়তা রক্ষার জন্য তাদের ল্যাপটপের ওয়েবক্যাম ঢেকে রাখেন। কমি জানান, তিনি এটি করতে শুরু করেন, কারণ তিনি তার চেয়েও স্মার্ট একজনকে ক্যামেরায় টেপ লাগিয়ে রাখতে দেখেছিলেন। কোনো কারণে কম্পিউটারের অ্যাকসেস হ্যাকারদের হাতে চলে গেলেও ওয়েবক্যাম ঢাকা থাকলে লাইভ ভিডিও ধারণ করতে পারবে না তারা। এ একটি কাজের মাধ্যমে অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। ওয়েবক্যামে কাভার না থাকলে অস্বচ্ছ টেপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
ওয়েবক্যামের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা
ওয়েবক্যামে কাভার দেয়া সম্ভব না হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন অথবা ডিজেবল করা যেতে পারে। এক্সটার্নাল ওয়েবক্যাম হলে সহজেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যায়। তবে ল্যাপটপে সাধারণত ওয়েবক্যাম স্থায়ীভাবে যুক্ত করা থাকে। এক্ষেত্রে সেটিংস থেকে ডিজেবল করতে হয়। ডিভাইস ম্যানেজার থেকে ‘ক্যামেরাস’ অপশন থেকে ডিজেবল করা যাবে। তবে হ্যাকারদের হাতে কম্পিউটারের পুরো অ্যাকসেস থাকলে তারা এ সেটিংসও পরিবর্তন করতে পারবে। ফলে কাভার ব্যবহার করাই সবচেয়ে নিরাপদ মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের ওয়েবক্যাম অ্যাকসেস বন্ধ করা
বিভিন্ন ধরনের কাজের সুবিধার্থে অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে ওয়েবক্যাম অ্যাকসেসের অনুমতি দিতে হয়। কিন্তু কাজটি ক্ষেত্রবিশেষে ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এজন্য অ্যাপ বা ওয়েবসাইট কতটা বিশ্বাসযোগ্য ও নিরাপদ তা যাচাই না করে ওয়েবক্যাম অ্যাকসেসের অনুমতি দেয়া ঠিক হবে না। ‘প্রাইভেসি অ্যান্ড সিকিউরিটি’ সেটিংসের ক্যামেরা অপশন থেকে অনুমতি বন্ধ করা যাবে। একইভাবে ব্রাউজার থেকে কোন কোন ওয়েবসাইটের জন্য অনুমতি দেয়া আছে তা দেখা সম্ভব।
মিটিংয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে সচেতনতা
ওয়েবক্যাম সম্পর্কে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরও মিটিংয়ে যুক্ত হওয়ার সময় ব্যাকগ্রাউন্ডে কী দেখা যাচ্ছে সেক্ষেত্রে অবহেলা করলে প্রাইভেসি লঙ্ঘন হতে পারে। যেহেতু লাইভ ব্রডকাস্ট হচ্ছে, তাই সবাই দেখতে পারবেন এবং রেকর্ডও হতে পারে। সেজন্য যতটা সম্ভব ব্যাকগ্রাউন্ড পরিষ্কার রাখা জরুরি। তবে মিটিং অ্যাপগুলোয় ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার করার অপশন থাকে। তা চালু করে নেয়া যেতে পারে।
ওয়েবক্যাম ড্রাইভারের হালনাগাদ
ওয়েবক্যামের ড্রাইভার নিয়মিত হালনাগাদ না করলে হ্যাকাররা খুব সহজেই এর অ্যাকসেস নিতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব ড্রাইভার হালনাগাদ করে। তবে এক্সটার্নাল ওয়েবক্যামের ক্ষেত্রে কাজটি আলাদাভাবে করার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। যে কোম্পানির ওয়েবক্যাম ব্যবহার করা হচ্ছে, তার ওয়েবসাইটে সাধারণত ড্রাইভার পাওয়া যায়, যা নামিয়ে হালনাগাদ করা যেতে পারে।