স্মার্টফোনের প্রযুক্তি যত এগোচ্ছে, ততই মোবাইল ফোন দিয়ে কাজ করার সুযোগ বাড়ছে। এখন অনেক কাজই শুধু মোবাইল দিয়েই করা সম্ভব হচ্ছে, যেগুলোর জন্য আগে ডেস্কটপ কম্পিউটার দরকার হতো। অনলাইন আয়ের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়।
তবে সুযোগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিভ্রান্তিও। অনেকেই মোবাইল দিয়ে আয় করতে গিয়ে ভুল পথে পা ফেলছেন, যার কারণে হতাশ হয়ে ফিরে আসছেন। তাই কোন পথে গেলে আয় সম্ভব, আর কোনটা এড়িয়ে চলা ভালো—তা জানা জরুরি।
কীভাবে আয় করা সম্ভব?
ইউটিউব ভিডিও বানিয়ে
আপনার যদি কোনো বিষয়ে ভালো দক্ষতা থাকে, সেটি নিয়েই বানাতে পারেন ভিডিও। একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে নিয়মিত মানসম্পন্ন ভিডিও পোস্ট করলে ধীরে ধীরে আয় শুরু হতে পারে। তবে ইউটিউব থেকে আয় করতে হলে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়—যেমন, নির্দিষ্ট সংখ্যক সাবস্ক্রাইবার ও ঘণ্টা ভিত্তিক ভিউ।
মোবাইল দিয়ে লেখালেখি
অনলাইনে এখন কনটেন্ট লেখকের চাহিদা অনেক। আপনি যদি ভালো লিখতে পারেন, তাহলে মোবাইল দিয়েই বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ফ্রিল্যান্স লেখক হিসেবে কাজ করতে পারেন। চাইলে নিজের ব্লগও খুলতে পারেন। গুগলের Blogger.com এই কাজে সহজ একটি প্ল্যাটফর্ম।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে
ফেসবুক, টুইটারের মতো প্ল্যাটফর্মে লেখালেখি বা কনটেন্ট তৈরি করেও আয় করা যায়। নিজের পেজ বা গ্রুপ খুলে তাতে নিয়মিত পোস্ট দিলে স্পন্সরশিপ বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে আয় হতে পারে।
ছবি তুলে বিক্রি
ভালো ক্যামেরার ফোন থাকলে ছবি তুলে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করতে পারেন। কয়েকটি জনপ্রিয় ছবি বিক্রির সাইট হলো Shutterstock, Adobe Stock ইত্যাদি। এর বাইরে অনলাইন ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও আয় সম্ভব।
ডেলিভারি সেবা
ই-কমার্স খাতে ডেলিভারির প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ফুড ডেলিভারি বা অন্যান্য ডেলিভারি সেবা দিতে পারেন। শহর এলাকায় এই আয় তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।
অনলাইন শেখানো বা মেন্টরিং
আপনার যদি কোনো বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকে, তবে সেটি অনলাইনেই অন্যদের শেখাতে পারেন। ভিডিও কল বা রেকর্ডেড লেকচারের মাধ্যমে বিভিন্ন কোর্স চালিয়ে আয় করা যায়।
রিসেলিং ব্যবসা
ShopUp বা Meesho-এর মতো অ্যাপ ব্যবহার করে অন্য প্রতিষ্ঠানের পণ্য রিসেল করতে পারেন। এতে আপনাকে পণ্য কিনে রাখতে হয় না। শুধু অর্ডার এনে দিলেই কমিশনের ভিত্তিতে আপনি আয় করবেন।
যেসব ভুল ধারণা থেকে দূরে থাকতে হবে
অনলাইনে আয়ের নামে অনেক অ্যাপ বা ওয়েবসাইট রয়েছে, যেগুলোর কার্যক্রম টিকেই না। যেমন: Swagbucks, Google Opinion Rewards, Inboxdollars, NeoBux ইত্যাদি অ্যাপে কাজ বলতে সার্ভে করা, ভিডিও দেখা, অ্যাপ রেফার করা—এসব। এতে সামান্য আয় হয় ঠিকই, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি কোনো লাভ নেই।
এই ধরনের অ্যাপ ব্যবহারে নিজের দক্ষতা বাড়ে না, বরং সময়ই নষ্ট হয়। তাই অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে শুরুতেই একটি দক্ষতা আয়ত্তে আনতে হবে। এরপর সেই স্কিল কাজে লাগিয়ে নিয়মিত কাজ করলেই ধীরে ধীরে সফলতা আসবে।