ডিজিটাল সেবা বাড়ায় ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে চতুর্থ প্রজন্মের নতুন প্রযুক্তি ফোরজি সেবা। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু হয় নতুন এই প্রযুক্তির। এর পরিপ্রেক্ষিতে জুন পর্যন্ত গত ১৬ মাসেই দেশে ফোরজি ব্যবহারকারীর সংখ্যা এক কোটি ৯১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্যমতে, গত ১৬ মাসে দেশে ফোরজি ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় এক কোটি ৯১ লাখ ৩১ হাজার। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৮৯ লাখ ২৭ হাজার, যেটি ফোরজি গ্রাহক বিবেচনায় এখনও সর্বোচ্চ। এদিকে প্রায় ৬৯ লাখ ৮২ হাজার গ্রাহক নিয়ে ফোরজি গ্রাহকের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রবি আজিয়াটা। এছাড়া বাংলালিংকের রয়েছে প্রায় ২৮ লাখ ৩০ হাজার ফোরজি গ্রাহক। আর ফোরজি সেবায় সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান টেলিটক। প্রতিষ্ঠানটির ফোরজি গ্রাহক প্রায় তিন লাখ ৯২ হাজার।
এদিকে সারা দেশে ফোরজি সেবার কাভারেজ নিয়ে অপারেটরগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রামীণফোনের ফোরজি গ্রাহক বেশি হলেও কাভারেজে তুলনামূলকভাবে এগিয়ে রয়েছে রবি আজিয়াটা। সারা দেশে প্রায় আট হাজার পয়েন্টে ফোরজির (বিটিএস) কাভারেজ করছে রবি আজিয়াটা। অন্যদিকে গ্রাহক পর্যায়ে গ্রামীণফোন শীর্ষে থাকলেও ফোরজি কাভারেজে পিছিয়ে রয়েছে অপারেটরটি। সারা দেশে গ্রামীণফোন প্রায় সাড়ে সাত হাজার পয়েন্টে ফোরজির (বিটিএস) কাভারেজ করছে। এছাড়া বাংলালিংকের প্রায় তিন হাজার পয়েন্টে ফোরজির (বিটিএস) কাভারেজ রয়েছে। অন্যদিকে কাভারেজ সক্ষমতায় প্রাইভেট অপারেটরগুলোর চেয়ে ফোরজি কাভারেজে বরাবরই পিছিয়ে রয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন প্রতিষ্ঠান টেলিটক। প্রতিষ্ঠানটির ফোরজি সেবা চালু হলেও সারা দেশে কাভারেজ (বিটিএস) কত, সেটির সঠিক তথ্য জানা নেই টেলিটক কোম্পানি সচিবের।
অন্যদিকে দেশে ফোরজি সেবা চালু হলেও এখনও শীর্ষে টুজি (ভয়েস কল) গ্রাহক। বর্তমানে দেশে টুজি গ্রাহক প্রায় আট কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের টুজি গ্রাহক রয়েছে প্রায় চার কোটি ১৬ লাখ ১৯ হাজার; রবি আজিয়াটার দুই কোটি ৩৯ লাখ ৫৩ হাজার; বাংলালিংকের প্রায় এক কোটি ৫২ লাখ ৭৬ হাজার ও টেলিটকের রয়েছে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার।
এছাড়া দেশে থ্রিজি গ্রাহক রয়েছে প্রায় ছয় কোটি ১৬ লাখ ৬৩ হাজার। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের প্রায় দুই কোটি ৪৭ লাখ ৮৪ হাজার; রবি আজিয়াটার প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ ৪০ হাজার এবং বাংলালিংকের রয়েছে এক কোটি ৬৫ লাখ ৬২ হাজার।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের ই-কমার্সে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। ই-কমার্সের প্রতি আগ্রহীদের বেশিরভাগই তরুণ-তরুণী। পর্যায়ক্রমে ফোরজি গ্রাহক বাড়বে। ডেটা প্যাকেজ চালু হলেও এখনও ভয়েস কলের জনপ্রিয়তা বেশি। তবে ইন্টারনেটের মূল্যসাশ্রয়ী ডেটা প্যাকেজে জোর দিলে ফোরজি গ্রাহক বিপুল হারে বাড়বে।
তারা আরও জানান, আজ থেকে পাঁচ বছর আগেও মানুষ ই-কমার্স সম্পর্কে বুঝত না। এখন সময় বদলে গেছে, মফস্বলের মানুষও এখন অনলাইনে কেনাকাটা করে। একসময় চাকরির আবেদনের জন্য দোকানে যেতে হতো। এখন ঘরে বসেই তা করা যায়। অর্থাৎ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফোরজি প্রযুক্তির যাত্রা শুরু করে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও রবি আজিয়াটা। ওই সময় ফোরজি প্রজেক্ট পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়ায় সেবাটি প্রদানে পিছিয়ে পড়ে টেলিটক। দুই দফা উদ্যোগ সফল না হলেও তৃতীয় দফায় গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা ও চট্টগ্রামে সেবাটি চালু করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি।