মোট গ্রাহকের ৪৫.৯ শতাংশ ফোরজি গ্রাহক নিয়ে ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে ফোরজি সেবায় নেতৃত্ব আরো সুসংহত করেছে রবি। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবি’র মোট গ্রাহকের ৭৩.৪ শতাংশ গ্রাহকই ছিলেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী যা এ খাতে সর্বোচ্চ। আজ ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করে এসব তথ্য জানিয়েছে অপারেটরটি।
রবি ১৪ হাজার ৮৯১টি ফোরজি সাইট দিয়ে দেশের ৯৮.২ শতাংশ জনগণের জন্য ৪-জি কভারেজ নিশ্চিত করেছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির ডাটা ব্যবহারকারীরা গড়ে প্রতি মাসে ৪.৬জিবি ডাটা ব্যবহার করেছেন। গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে প্রতি মাসে গ্রাহক প্রতি ডাটা ব্যবহারের পরিমাণ ৩৭.১ শতাংশ বেড়েছে ।
২০২১ সালের শেষ প্রান্তিকের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবির গ্রাহক সংখ্যা দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৫ কোটি ৪১ লাখে পৌঁছেছে। এছাড়া গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় গ্রাহক সংখ্যা ৪.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
একইসাথে গত প্রান্তিকের তুলনায় ডাটা গ্রাহক সংখ্যা দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩ কোটি ৯৭ লাখে পৌঁছেছে এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ডাটা গ্রাহক সংখ্যা ৮.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে রবি’র ৪-জি গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৪৮ লাখে পৌঁছেছে ।
২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে ২ হাজার ১৮ দশমিক ৯ কোটি টাকা আয় করেছে রবি। গত প্রান্তিকের তুলনায় কোম্পানির আয় ১.৩ শতাংশ হ্রাস পেলেও গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় রাজস্ব ১.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এক নজরে প্রথম প্রান্তিক ২০২২: (জানুয়ারি-মার্চ)
· সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ৪১ লাখ
· ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ৩ কোটি ৯৭ লাখ, যা রবি’র মোট গ্রাহকের ৭৩ দশমিক ৪ শতাংশ- এ খাতে সর্বোচ্চ
· মোট আয়ের পরিমাণ ২ হাজার ১৮ দশমিক ৯ কোটি টাকা
· ৪২.২ শতাংশ মার্জিনসহ সুদ, কর, ডেপ্রিসিয়েশন ও এমরটাইজেশন‘র (ইবিআইটিডিএ) আগে আয়ের পরিমাণ ৮৫১ দশমিক ১ কোটি টাকা
· শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ০.০৮ টাকা
· মূলধনী বিনিয়োগ ১০৭.৩ কোটি টাকা
· কর পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) ৩৯.৮ কোটি টাকা
· রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা ৯৫৭.৯ কোটি টাকা, যা রবির ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে অর্জিত আয়ের ৪৭.৪ শতাংশ
গত প্রান্তিকের তুলনায় ভয়েস সেবায় রবি’র আয় ১.৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে; তবে গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় এই খাতের আয় ৮.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে ডাটা সেবায় গত প্রান্তিকের তুলনায় আয় বেড়েছে ১.৬ শতাংশ এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় আয় কমেছে ৪.৬ শতাংশ।
৪২.২ শতাংশ মার্জিনসহ ইবিআইটিডিএ গত প্রান্তিকের তুলনায় ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে ৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৮৫১.১ কোটি টাকা। ২০২১ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় এটি ৪.৯ শতাংশ বেশি। ইবিআইটিডিএ মার্জিন গত প্রান্তিকের তুলনায় ৪ শতাংশ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে, আর গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে ১.২ শতাংশ পয়েন্ট ৷
৩৯.৮ কোটি টাকা কর পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) নিয়ে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষ করেছে রবি। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ০.০৮ টাকা। তবে ২ শতাংশ ন্যূনতম করের বাধা না থাকলে পিএটি’র পরিমাণ ৮০.২ কোটি এবং ইপিএস দ্বিগুণ হয়ে ০.১৫ টাকা হতে পারতো।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ৯৫৭.৯ কোটি টাকা যা ওই প্রান্তিকের মোট আয়ের ৪৭.৪ শতাংশ। একই প্রান্তিকে কোম্পানিটির মূলধনী বিনিয়োগের পরিমাণ ১০৭.৩ কোটি টাকা।
কোম্পানির আর্থিক ফলাফল সম্পর্কে রবি’র অ্যাক্টিং সিইও অ্যান্ড সিএফও এম. রিয়াজ রশীদ বলেন, “যদিও আমরা আমাদের আর্থিক অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্ট, তবে বর্তমান কর ব্যবস্থা আমাদের প্রবৃদ্ধিতে অব্যাহতভাবে বাধা হিসেবে কাজ করছে। বিশেষ করে ২ শতাংশ ন্যূনতম কর্পোরেট করের প্রভাবে আমাদের চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে পিএটি আক্ষরিক অর্থে অর্ধেক হয়ে গেছে। এই অন্যায্য করের কারণে আমাদের পিএটি ৮০.২ কোটি টাকার পরিবর্তে হয়েছে ৩৯ দশমিক ৮ কোটি টাকা। যদিও সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা আয়োজিত সফল তরঙ্গ নিলামে একটি ব্যবসা-বান্ধব আবহের প্রতিফলন ঘটেছে। আমাদের প্রত্যাশা আসছে বাজেটে এই খাতের জন্য একটি যৌক্তিক কর কাঠামো প্রদানের মাধ্যমে এই ধারা অব্যহত থাকবে।”