‘টেক্সট-ওনলি ফেসবুক’ ও ‘ডিসকভার অ্যাপ’ সেবা চালু হওয়ার পর সুফল পেতে শুরু করেছে দেশের মানুষ। বর্তমানে দেশে তিন কোটির বেশি মানুষ তথ্যপ্রবাহের সঙ্গে যুক্ত থাকতে ফ্রি ডেটায় ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।
মেটার সঙ্গে পার্টনারশিপে দেশে চালু হওয়া এই উদ্যেগে মোবাইল ফোন অপারেটরদের বর্তমানে ১ জিবিপিএসের বেশি ব্যান্ডউইথ খরচ করতে হয়। পুরো প্রক্রিয়া ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন বাস্তবায়নের সহায়ক হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের মে মাসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এক মাসে ৩ কোটি ৩৪ লাখ গ্রাহক টেক্সট-অনলি ফেসবুক ব্যবহার করেছেন। যেখানে গ্রামীণফোনের এক কোটি ৫০ লাখ, রবির এক কোটি ৬ লাখ এবং বাংলালিংকের ৭০ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহক ছিলেন। চলতি মাসে ৩ অপারেটর মিলে ডিসকভার অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৪৭ হাজার ৪১৪ জন।
এই মাসে অপারেটরগুলোর মোট ব্যান্ডউইথ খরচ হয়েছে এক দশমিক শূন্য ৩ জিবিপিএস। যেখানে গ্রামীণফোনের শূন্য দশমিক ৪৩, রবির শূন্য দশমিক ৩৮ এবং বাংলালিংকের শূন্য দশমিক ২১ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ খরচ হয়েছে।
ডেটার হিসেবে যা ছিল গ্রামীণফোনের (জিপি) এক হাজার ৪১৯ দশমিক ৮ টেরাবাইট, রবির এক হাজার ২৭৮ টেরাবাইট এবং বাংলালিংকের ৭১৩ টেরাবাইট।
টেক্সট-ওনলি ফেইসবুক সেবা কী:
গ্রাহকরা ডাটা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও ফেসবুকে সংযুক্ত থাকতে পারেন এবং অনলাইনে গুরুত্বপূর্ণ টেক্সট-ভিত্তিক তথ্য আদান প্রদান করতে পারেন। এই পরিষেবায় শুধু টেক্সট দেখা যায়, কোন ছবি কিংবা ভিডিও দেখা যায় না।
ব্যবহারকারীরা পাঠ্যভিত্তিক তথ্য যেমন: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজ, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি সংক্রান্ত নির্দেশনা, অন্যান্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য যেমন ফেসবুকে কোভিড তথ্যকেন্দ্র সম্পর্কে জানতে পারে।
ডিসকভার অ্যাপ সেবা কী:
গ্রাহকরা ফ্রি ডাটা সীমার মধ্যে ই-পরিসেবার সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারেন। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকদের ডিসকভার অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হয়। তবে ডিসকভার অ্যাপটি ব্যবহারের জন্য ফেসবুক এক্যাউন্ট থাকার বাধ্যবাধকতা নেই।
গ্রাহকরা দৈনিক এবং মাসিক ভিত্তিতে অপারেটর অনুযায়ী বিটিআরসি অনুমোদিত ডাটা সীমার মধ্যে অ্যাপ/মোবাইল ওয়েবের মাধ্যমে বিনামূল্যে ব্রাউজিং উপভোগ করতে পারেন। তবে একজন গ্রাহক তার দৈনিক এবং মাসিক ব্যবহারের সীমা অতিক্রম করার পর নতুন ডাটা প্যাক কেনা না পর্যন্ত কোনো সাইট অ্যাক্সেস করতে পারেন না।
এই অ্যাপের মাধ্যমে ফ্রি ব্রাউজিং কালে গ্রাহকরা কোনো ছবি বা ভিডিও দেখতে পারবেন না। উল্লিখিত বিষয়বস্তু দেখতে চাইলে গ্রাহকরা ডাটা প্যাক কেনার মাধ্যমে তা পারেন।
গ্রাহকরা সরকারি সংস্থার ওয়েবসাইটসহ অন্যান্য ওয়েবসাইটেও প্রবেশ করতে পারেন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জাতীয় পরীক্ষার প্রস্তুতির বিভিন্ন উপকরণসহ স্কুল প্রকাশিত সকল তথ্য দেখতে পারে।
এর আগে, ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর এই সেবা চালু হয়। দেশের মোবাইল ফোন গ্রাহকদের ইন্টারনেট না থাকলেও ‘টেক্সট-ওনলি ফেসবুক’ ও ‘ডিসকভার অ্যাপ’ সেবা চালুর সুযোগ করে দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। রমনায় বিটিআরসি কার্যালয়ে এ সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।