টেলিযোগাযোগ সেবা সম্পর্কে অভিযোগ বা মতামত জানতে আবারও শুরু হতে যাচ্ছে গণশুনানি। শিগগির দেশব্যাপী এ গণশুনানির আয়োজন করা হবে। এতে অংশ নিয়ে মোবাইল নেটওয়ার্কের গতি, ইন্টারনেট সেবা, ডাটা প্যাকেজের দামসহ নানা বিষয়ে অভিযোগ ও মতামত জানাতে পারবেন গ্রাহকরা।
বিটিআরসি সূত্র জানিয়েছে, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক টেলিযোগাযোগ খাতের সেবা সম্পর্কে নাগরিকদের সমস্যা, অভিযোগ ও মতামত শুনতে চান। এজন্য গণশুনানি অনুষ্ঠান আয়োজনে বিটিআরসিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
সম্প্রকি এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বিটিআরসিকে গণশুনানির আয়োজন করতে বলেছি। খুব শিগগির গণশুনানি করা হবে। সেখানে আমরা সাধারণ গ্রাহকদের কথা শুনবো। মানুষ যেভাবে চাইবেন, সেভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিটিআরসির মহাপরিচালক (এসএস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খলিলুর রহমানও গণশুনানি আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘শিগগির গণশুনানির আয়োজন করা হচ্ছে। সেখানে গ্রাহকরা কী বলেন, সেটা আমলে নেবো আমরা।’
জানা গেছে, বিটিআরসি ২০২১ সালের ২২ আগস্ট ঢাকায় মূল গণশুনানি করে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ওই শুনানি অনলাইনে করা হয়েছিল। এরপর ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে ২০২২ সালে একটি গণশুনানি করা হয়। ২০২১ সালের ওই গণশুনানিতে ৯২১ জন ৯২১টি প্রশ্ন, অভিযোগ বা মতামত পাঠান বিটিআরসিতে।
বিটিআরসি যাচাই-বাছাই করে ১২০ জনকে শুনানিতে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানায়। এছাড়া চট্টগ্রামের গণশুনানিতে অংশে নিতে নিবন্ধন করে ৮৪৮ জন। এরমধ্যে সশরীরে ১৮২ জন, অনলাইনে ৯৪ জন এবং অন্যান্য উপায়ে ১৭ জন অংশ নেন।
২০১৯ সালের জুনেও একটি গণশুনানির আয়োজন করেছিল নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি। টেলিযোগাযোগ সেবার মান নিয়ে প্রথম গণশুনানি করেছিল ২০১৬ সালে ২২ নভেম্বর। তবে সেই গণশুনানিতে মোবাইল অপারেটরদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ উঠলেও বেসরকারি কোনো মোবাইল অপারেটর অংশ নেয়নি। ওই সময় শুনানিতে অংশ নিতে অনলাইনে নিবন্ধন করেছিলেন এক হাজার ৫০ জন। তবে অভিযোগ জানাতে ডাক পেয়েছিলেন ৪২০ জন। যদিও স্বল্প সময়ে মাত্র ৩২ জন অভিযোগ জানাতে পারেন।
গণশুনানিতে উঠে আসে যেসব অভিযোগ-সমস্যা
গণশুনানিগুলোতে সাধারণ গ্রাহকরা অনলাইন নিবন্ধনের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য, প্রশ্ন, পরামর্শ জানিয়ে সরাসরি অংশ নিতে পারেন। এছাড়া যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য এতে অংশগ্রহণে নিবন্ধনের সুযোগ থাকে।
আগের গণশুনানিতে গ্রাহকরা সাধারণত মোবাইল অপারেটরগুলোর বিভিন্ন এলাকায় ঠিকঠাক নেটওয়ার্ক না থাকা, কলড্রপ, চলতি পথে মহাসড়ক-রেলে নেটওয়ার্ক না পাওয়া, এমএনপি নিয়ে সমস্যা, ব্রডব্যান্ডে এলাকাভিত্তিক সিন্ডিকেশন, ইন্টারনেটের দাম বৃদ্ধি, বাড়তি কলরেট, ইন্টারনেটের গতি না থাকা, বিভিন্নভাবে মোবাইলের টাকা কেটে নেওয়াসহ নানা অভিযোগ ও ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন।