বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেডকে একটি চূড়ান্ত নির্দেশনা জারি করতে যাচ্ছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সামিট টাওয়ারস লিমিটেডের কাছে টাওয়ার বিক্রির মোট মূল্যের ৫.৫ শতাংশ ফি, প্রযোজ্য ভ্যাট এবং বিলম্ব ফি-সহ পুরো অর্থ দশ কর্মদিবসের মধ্যে বিটিআরসির কাছে জমা দিতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বাংলালিংকের সঙ্গে বিটিআরসির দ্বন্দ্ব চলছিল। বিশেষ করে মোবাইল টাওয়ার বিক্রির লেনদেনে নিয়ন্ত্রক ফি প্রদানের বাধ্যবাধকতার বিষয়ে অপারেটরের আপত্তির কারণে সমস্যা জটিল হয়।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, বাংলালিংক ১,০৬৬ কোটি টাকায় (১০৬.৬৩ মিলিয়ন ডলার) তাদের ২,০১২টি টাওয়ার সামিট কমিউনিকেশনসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সামিট টাওয়ারস লিমিটেডের কাছে বিক্রি করে। নিয়ম অনুযায়ী, এ লেনদেনের ভিত্তিতে বাংলালিংককে বিটিআরসিকে ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ ৬৯ কোটি টাকা প্রদান করার কথা ছিল। তবে, সময়মতো ফি পরিশোধ না করায় এখন বিলম্ব ফি যুক্ত হয়ে এই পরিমাণ আরও বাড়বে।
দীর্ঘ প্রতিক্রিয়া ও আইনগত অবস্থান:
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিটিআরসি বাংলালিংককে আনুষ্ঠানিকভাবে ফি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু বাংলালিংক দাবি করে, এই ধরনের ফি তাদের টাওয়ার বিক্রির লেনদেনে প্রযোজ্য নয়।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে বিটিআরসি আইনি পরামর্শ গ্রহণের পর তাদের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে। পরবর্তীতে ৩১ অক্টোবরের চিঠিতে বাংলালিংক তাদের পূর্বের অবস্থানেই অটল থাকে।
পরিস্থিতি নিরসনে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়, সর্বশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে।
বিটিআরসির চূড়ান্ত অবস্থান:
বিটিআরসির নথি অনুযায়ী, বাংলালিংক ও বিটিআরসি দুটি বিষয়ে একমত হয়েছে:
১. টাওয়ার অবকাঠামো টেলিকম সরঞ্জামের অংশ।
২. এ ধরনের লেনদেনে টাওয়ার শেয়ারিং গাইডলাইনসহ সব প্রাসঙ্গিক আইন, বিধিমালা ও নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।
বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানান, বাংলালিংককে দ্রুত অর্থ জমা দিতে বাধ্য করার জন্য এখন কঠোর আইনি পদক্ষেপও বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে এই ফি আদায় নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।