দেশে নতুন নতুন প্রযুক্তির চালুর পাশাপাশি প্রযুুক্তিখাতে নিজেদের দক্ষতা কাজে লাগাতে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ২০টি হাইটেক পার্ক নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
বরাদ্দকৃত জায়গাগুলোর মধ্যে বরিশালে রয়েছে দুটি হাইটেক পার্ক। এর মধ্যে একটি হলো আইটি পার্ক। এজন্য জমি বরাদ্দ করা হয়েছে ৪ দশমিক ১৮ একর। অন্যটি হলো সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, বরিশাল (শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার)। এর জন্য ২ দশমিক ৫১ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় হচ্ছে ৩টি হাইটেকের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক’-এর জন্য জমি বরাদ্দ করা হয়েছে ১৫৩ দশমিক ৮৩ একর; সফওয়্যার টেকনোলজি পার্কের জন্য ৪ একর ও আইটি পার্কের জন্য ৫ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার রামুতে ৮ দশমিক ৭ একর জায়গাতে নির্মিত হবে ‘আইটি পার্ক’; রংপুর আইটি পার্কের জন্য ৮ দশমিক ৫৯ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে; নাটোর সদরে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের জমি বরাদ্দ করা হয়েছে ১ দশমিক ২৩ একর; আর সিংড়া উপজেলার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের ৫ দশমিক ২ একর জমি; নেত্রকোনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের ১ দশমিক ১৩ একর; মাগুরা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের ৫ একর; রাজশাহী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কের ৩০ দশমিক ৬৭ একর জমি; ময়মনসিংহ আইটি পার্কের ৭ একর জমি; জামালপুর আইটি পার্কের ৫ দশমিক ২৩ একর জমি; কেনাণীগঞ্জ আইটি পার্কের জন্য ৩ দশমিক ২৭২ একর জমি; খুলনার দিঘলিয়া আইটি পার্কের জন্য ৮ একর জমি; গোপালগঞ্জ আইটি পার্কের জন্য ৪ একর এবং কুমিল্লা আইটি পার্কের জন্য শূণ্য দশমিক ১২ একর ও কুমিল্লা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের ২ দশমিক ৫৯ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৭ সালে ১২টি জেলায় আইটি/ হাই-টেক পার্ক স্থাপনের জন্য প্রকল্প নেয় সরকার। এগুলো হল- ময়মনসিংহ সদর; জামালপুর সদর; ঢাকার কেরাণীগঞ্জ; গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; কুমিল্লা সদর দক্ষিণ; চট্টগ্রাম বন্দর; কক্সবাজারের রামু; রংপুর সদর; নাটোরের সিংড়া; সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ও বরিশাল সদর এবং খুলনার কুয়েট। এর জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১ হাজার ৭৯৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা। যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করে প্রায় ২৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ও ভারতীয় ২য় লাইন অব ক্রেডিট-এর অর্থায়ন ১ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিলে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিলেটের কোম্পানিগঞ্জে নির্মাণাধীন হাইটেক পার্কের আইটি বিজনেস সেন্টার এবং ব্রিজ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন ও পরিদর্শনে সারা দেশে ২৮টি হাইটেক পার্ক নির্মাণের কথা জানান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
পলক সে সময় সাংবাদিকদের জানান, দেশে প্রতি বছর সাড়ে তিন কোটি মোবাইল ফোন এবং পাঁচ লাখ ল্যাপটপ আমদানি করতে হয়, যার জন্য খরচ হয় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। হাইটেক পার্ক নির্মাণ হলে দেশেই মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ উৎপাদন সম্ভব হবে। এতে দেশের এক বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে।’
প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকারের রূপকল্প ২০২১ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে হাইটেক পার্ক এবং সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।