গ্রামীণফোন ও রবির কাছে বকেয়া পাওনার বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে বলে আশাব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক বৈঠক শেষ এ আশাব্যক্ত করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার এবং গ্রামীণফোন উভয় পক্ষই যেন লাভজনক অবস্থায় চলতে পারে সেটিই চায় সরকার। একদিকে যেমন ব্যবসার উপযুক্ত পরিবেশ বজায় রাখতে হবে অন্যদিকে সরকারের পাওনাও পরিশোধ করতে হবে।
অতীতে এই পাওনা নিয়ে অনেক ভুল বোঝাবুঝি ছিল, এখনও কিছুটা রয়েছে। আর তা সমাধানের জন্যই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী। এ বিষয়ক মামলা প্রত্যাহার হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এই সেক্টরের ক্ষতি হলে সরকার অনেক রাজস্ব হারাবে। তাই এই সেক্টরের ক্ষতি হয় এমন কোন পথে হাঁটবে না সরকার। একটা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় খুব অল্পদিনের মধ্যেই সমাধান হবে।
বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, ২২ বছরের পথচলায় এনবিআর ও বিটিআরসির সঙ্গে গ্রামীণফোনসহ অন্যান্য মোবাইল অপারেটরদের অনেক পাওনা রয়েছে। তারা এটি আলোচনার ভিত্তিতে পরিশোধ করবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে সরকার নিয়মিত ভ্যাট-ট্যাক্স পায়। তবে যে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি বকেয়া তা এখন সুদ আসলে মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে সরকারের।
বিটিআরসির দাবি অনুযায়ী, গ্রামীণফোন ও রবির কাছে প্রতিষ্ঠানটির পাওনা ১৩ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি টাকা।
এ টাকা আদায়ে ব্যান্ডউইথ সীমিত করা এবং প্যাকেজ ও সরঞ্জামের ছাড়পত্র (এনওসি) দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল বিটিআরসি। তাতে কোনো কাজ না হওয়ায় এরপর ৫ সেপ্টেম্বর দুই অপারেটরকে লাইসেন্স (টু-জি ও থ্রি-জি) বাতিল কেন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। জবাবের সময় ৩০ দিন।
বকেয়া আদায়ে সরকার এতদিন হার্ডলাইনে থাকলেও আজ এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি সমঝোতার ভিত্তিতে সমাধান করার কথা জানালেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল।
প্রসঙ্গত, দেশে গ্রাহকের হাতে থাকা ১৬ কোটি ৮২ হাজার নিবন্ধিত মোবাইল সিমের মধ্যে ৭ কোটি ৪৭ লাখ সিম গ্রামীণফোনের। আর রবির ৪ কোটি ৭৬ লাখ সিম রয়েছে গ্রাহকের হাতে। এই হিসাবে মোট গ্রাহকের ৪৬.৪৯ শতাংশ গ্রামীণফোন এবং ২৯.৬৫ শতাংশ রবির সেবা নিয়ে থাকেন।
দেশের ৯ কোটি ৪৪ লাখ ইন্টারনেট গ্রাহকের মধ্যে ৮ কোটি ৮৬ লাখই মোবাইল ফোনের ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, যা মোট গ্রাহকের ৯৩.৮৭ শতাংশ।