জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে মিথ্যা প্রচারণার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে সফটওয়্যার। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিজ্ঞানকে অস্বীকার করার সপক্ষে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে প্রকাশিত পোস্টের এক চতুর্থাংশই সফটওয়্যার বা বটের মাধ্যমে করা। বট হলো এমন এক কম্পিউটার প্রোগ্রাম যেটি সোস্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করা ও বার্তা পাঠানোর কাজটি নিখুঁতভাবে মানুষের মতোই করতে পারে।
ব্রাউন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দেখেছেন, বিশ্বাসযোগ্য বার্তা দেয়ার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অস্বীকার করার ক্ষেত্র তৈরিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে বট। এ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনের বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে এ ধরনের খবর প্রথম প্রকাশ করে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান।
গবেষকরা ২০১৭ সালের জুনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার ঘোষণার পর থেকে এ যাবতকালের ৬৫ লাখ টুইট যাচাই করেছেন। তারা দেখেছেন, এসব টুইটের ২৫ শতাংশ বটের মাধ্যমে পোস্ট করার সম্ভাবনা প্রবল। আর এর বেশিরভাগই বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কিত বিজ্ঞানকে অস্বীকার করা সংক্রান্ত।
গার্ডিয়ানের ওই প্রতিবেদনের প্রতিবেদক বলেছেন, এ গবেষণা প্রমাণ করে, জলবায়ু পরিবর্তনকে অস্বীকার করার প্রবণতাকে আরো পাকাপোক্ত করতে বট কেমন ভূমিকা রাখতে পারে!
বট স্বয়ংক্রিয়ভাবে পোস্ট করে বা মেসেজ পাঠায়। কিন্তু এর পেছনে অবশ্যই একজন মানুষের হাত থাকতে হয়। তবে ব্রাউন ইউনিভার্সিটির গবেষক দল এর পেছনে কে বা কারা আছেন তা শনাক্ত করতে পারেননি।
বটের মাধ্যমে পোস্ট করা বার্তা শনাক্ত করতে গবেষকরা ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটির উদ্ভাবিত একটি সফটওয়্যার ‘বটোমিটার’ ব্যবহার করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ভুয়া বিজ্ঞান’ সংক্রান্ত পোস্টের ৩৮ শতাংশ লেখা হয় বটের মাধ্যমে। আর তেল কোম্পানি এক্সন সম্পর্কিত টুইটের ২৮ শতাংশ লিখেছে বট।
তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় চলমান আন্দোলনের পক্ষে টুইটগুলোর মধ্যে বট লিখেছে খুবই কম সংখ্যক। গবেষকরা দেখেছেন, এ ধরনের টুইটের মাত্র ৫ শতাংশ সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লেখা। বট নিয়ে গবেষণা করেন ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপক এমিলিও ফেরারা। তিনি এ ধরনের বটকে ‘মেগাফোন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।