চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে সফলতার জন্য আমাদের সকলকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হবে বলেন মন্তব্য করেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম (পিএএ) ।
আজ বুধবার (১ জুলাই) বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অধীনে “উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প (আইডিয়া)” আয়োজিত “ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি)” বিষয়ে অনলাইন প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এন এম জিয়াউল আলম (পিএএ) আরো বলেন, ‘বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি কাজে দেশের দক্ষতা বা স্কিল ব্যবহার শুরু হয়েছে। আমাদের যে জনশক্তি আছে সেটাকে আরো প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলে যদি আমরা আগামী দিনের পথ গুলো দেখতে পারি তাহলে আমাদের যে কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন “২০৪১ সালে উন্নত বিশ্ব” সেটা আমরা অর্জন করতে পারব বলে আশাবাদী। সেই লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে একসাথে আগাতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিসিসি এর নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব বলেন,আইডিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশে উদ্ভাবনী সংস্কৃতি তৈরি করে একটি ইনোভেশন ইকোসিস্টেম সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছি। আইওটি এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, একটি স্মার্ট সিটি বা একটি স্মার্ট পরিবেশ তৈরি করতে আইওটি এর অবদান অপরিসীম। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীগণ আইওটি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবে বলে তিনি আশাবাদী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বুয়েটের সিএসই বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ড. এম কায়কোবাদ। তিনি জাপান, তাইওয়ান, কোরিয়া-সহ বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে ধরে তরুণদের দক্ষতা বাড়াতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, আমাদের শুধু কম্পিউটার থাকলেই চলবে না এর পাশাপাশি এর সাথে সংযোগ থাকতে হবে ও দক্ষতাও অর্জন করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার এখনকার রূপ হল “ডিজিটাল বাংলাদেশ”। এই ডিজিটাল বাংলাদেশ আমাদের নিজেদেরকেই প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বিদেশ থেকে কম্পিউটার এবং যন্ত্রাংশ কিনে, সফটওয়্যার কিনে, বিদেশের প্রকৌশলীদের বাংলাদেশে এনে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। বিদেশী পরামর্শক ব্যয়বহুল তাই দেশে যদি দক্ষতা বাড়ানো যায় তবে সেটা অধিক ফলপ্রসূ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
অনলাইন অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সৈয়দ মজিবুল হক। তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে ইন্টারনেটকে আমরা কিভাবে কাজে লাগাতে পারি এবং কিভাবে ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি ব্যবহার করতে পারি সে বিষয়ের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমানে প্রযুক্তিগত বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ আয়োজন করছে আইডিয়া প্রকল্প বলে তিনি জানান।
দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণটিতে রিসোর্স পারসন হিসেবে সংযুক্ত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইআইটি) এর সহযোগী অধ্যাপক ড. বি. এম. মইনুল হোসেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের প্রফেসর ড. এ. বি. এম. আলিম আল ইসলাম এবং বন্ডস্টেইন টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গ্লোবাল শেপার মীর শাহরুখ ইসলাম। প্রশিক্ষকগণ তাদের অভিজ্ঞতা প্রশিক্ষণার্থীগণের সাথে বিনিময় করেন এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইম্প্যাক্ট অব “ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি)”, লোকাল আইওটি রিসার্স উইথ গ্লোবাল ইম্প্যাক্টস এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইওটি বিষয়ে বিস্তারিত প্রশিক্ষণার্থীদের নিকট উপস্থাপন করা হয়। এই প্রশিক্ষণে রাজশাহী বিভাগের প্রায় ৭০ জনের অধিক প্রশিক্ষণার্থী অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে সংযুক্ত হন।
আইডিয়া প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) কাজী হোসনে আরা, প্রকল্পের সিনিয়র পরামর্শক আর এইচ এম আলাওল কবির, প্রকল্পের পরামর্শক শারমিন আকতার সাজ, কমিউনিকেশনস্ বিষয়ক পরামর্শক সোহাগ চন্দ্র দাস, প্রকল্পের কর্মকর্তা মোঃ মমিনুল ইসলাম-সহ রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ শিক্ষকগণ, বিসিসি ও আইসিটি বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ এসময় অনলাইনে উপস্থিত ছিলেন। সবার জন্য এই পুরো আয়োজনটি “স্টার্টআপ বাংলাদেশ” এর অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে লাইভ সম্প্রচার করা হয়।