আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী স্মার্টফোন। অতিরিক্ত ব্যবহার করলে অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মতো স্মার্টফোনও ধীরগতির হয়ে যায়। করোনা মহামারীর কারণে বাসা থেকে কাজ বৃদ্ধিতে স্মার্টফোনের ব্যবহারও লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে। স্মার্টফোন স্লো হয়ে গেলে যে ১০টি কাজ করা উচিত—
অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস বাদ দেওয়া
স্মার্টফোনে যদি অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস রাখা হয়, তাহলে সেটি স্লো হয়ে যায়। অদরকারী অ্যাপস ডাউনলোড করলে স্মার্টফোন বারবার হ্যাং হতে থাকে। এতে কাজের সময়ে বিব্রত হতে হয়। তাই অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস স্মার্টফোন ডিভাইসে না রাখাই ভালো। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি অ্যাপ রাখলে স্মার্টফোনের গতিশীলতা নষ্ট হয়। কিছুটা অনিয়মিত কিংবা কম ব্যবহূত অ্যাপসগুলোও বাদ দিতে পারেন। খুবই প্রয়োজন হলে পরবর্তী সময়ে ডাউনলোড করে কাজ করতে পারবেন।
সিনেমা, টিভি শো ও মিউজিক ডিলিট করে করা
এক বা একাধিকবার দেখার পরও আমরা অভ্যাসবশত অনেক সিনেমা, টেলিভিশন শো বা গান স্মার্টফোনে রেখে দিই। এগুলো স্মার্টফোনের মেমোরির ওপর চাপ প্রয়োগ করে। দেখা হয়ে গেছে এবং বর্তমানে খুবই জরুরি নয় এমন সিনেমা, টিভি শো ও মিউজিক ডিলিট করে ফেলুন।
ব্যাকগ্রাউন্ডে অ্যাপ বন্ধ করা
আপনি ফোন ব্যবহার না করলেও কিছু অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে সচল থাকে। এটা র্যাম ও প্রসেসরের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। আপনার স্মার্টফোন সচল রাখতে ব্র্যাকগ্রাউন্ডে সচল বিভিন্ন অ্যাপ ঠেকান।
অপারেটিং সিস্টেম আপডেট
স্মার্টফোন স্লো হওয়ার প্রধান কারণ অপারেটিং সিস্টেম সবসময় আপডেট না থাকা। অপারেটিং সিস্টেমকে সংক্ষেপে ওএস বলা হয়। ওএস আপডেট রাখা খুবই প্রয়োজন। কারণ স্মার্টফোন কোম্পানিগুলো ওএসের আপডেটে বাগ ও ল্যাগ ফিক্স করে থাকে। সে কারণে ওএস আপডেট না থাকলে স্মার্টফোন স্লো হয়ে যায়। তাই স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম সবসময় আপডেট রাখতে হয়।
অ্যাপসগুলো আপডেট রাখা
স্মার্টফোনের গতি স্লো হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ অ্যাপস আপডেট না রাখা। যেকোনো অ্যাপস আপডেট করা হলে ব্যবহারকারীর কাছে সেই অ্যাপস সম্মতি চায়। ব্যবহারকারীকে কেবল অ্যাপটি আপডেটের জন্য সম্মতি দিতে হবে। এতে স্মার্টফোনকে স্লো হওয়া থেকে রক্ষা করা যায়।
ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট
স্মার্টফোনটি যদি অতিরিক্ত স্লো হয়ে যায়, তাহলে ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট করে নিতে হবে। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট করতে চাইলে সব ডাটার ব্যাকআপ রেখে দেয়া উচিত। কারণ ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট করার পর স্মার্টফোনে পুরনো কোনো ডাটা থাকে না। ফ্যাক্টরি ডাটা রিসেট হয়ে গেলে নতুন করে সবকিছু সেটআপ করতে হবে।
মেমোরি স্টোরেজ ফুল
স্মার্টফোন স্লো হওয়ার আরেকটি কারণ মেমোরি স্টোরেজ ফুল হয়ে যাওয়া। ছবি, ভিডিও, গান, মেসেজ বা কনট্যাক্ট মেমোরি ফুল হয়ে গেলে স্মার্টফোন অস্বাভাবিকভাবে স্লো হয়ে যায়। তাই অপ্রয়োজনীয় জিনিস স্মার্টফোনে রাখা ঠিক নয়। যদি এমন কোনো ছবি বা ভিডিও স্মার্টফোনে থাকে, তবে সেসব ছবি বা ভিডিও ডিলিট করে দিন। পুরনো টেক্সট মেসেজের প্রতি মায়া থাকতে পারে বা থাকতে পারে অনেক স্মৃতি। এজন্য আমরা রেখে দিই সেগুলো। কিন্তু এটা করতে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় বা মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডারেরও অনেক মেসেজ জমা হয়ে পড়ে। একান্তই জরুরি না হলে যত সম্ভব টেক্সট মেসেজ ডিলিট করে দেয়া উত্তম।
ক্যাশে ক্লিয়ার করা
স্মার্টফোনের ক্যাশে ডাটা ক্লিয়ার না করা স্লো হওয়ার অন্যতম কারণ। এসব ফাইল ক্লিয়ার করে স্মার্টফোনের গতি আরো দ্রুত করা যায়। স্মার্টফোনে ক্যাশে ক্লিয়ার করতে হয় স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে। তবে এ ক্যাশের ফলে স্মার্টফোনের গতি কমে যায়। ক্যাশে ক্লিয়ার করার জন্য—সেটিংস > স্টোরেজ > ক্যাশে-তে যেতে হবে। এরপর ক্যাশে ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
ডাউনলোড ফোল্ডার ও ব্রাউজার ডাটা খালি করা
আমাদের ডাউনলোডকৃত বেশির ভাগ জিনিসই স্মার্টফোনের ডাউনলোড ফোল্ডারে জমা হয়ে থাকে। এখন আর ব্যবহার করা হচ্ছে না এমন ফাইল ডিলিট করে ফেলতে হবে। আমরা ইন্টারনেটে যে বিভিন্ন সাইট ব্রাউজিং করি, তার হিস্ট্রি থেকে যায়। নিয়মিত সেগুলো ডিলিট করা উচিত।
ব্যাটারি পাল্টানো
পুরনো এবং দুর্বল ব্যাটারি স্মার্টফোনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে। তবে ব্যাটারি পরিবর্তনের সময় এটা খেয়াল রাখতে হবে তা অথরাইজড সোর্স থেকে এসেছে কিনা। যেমন আইফোনের জন্য আপনার যাওয়া উচিত নিকটস্থ অ্যাপল স্টোরে এবং অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের জন্য তাদের নিজস্ব আউটলেটে যোগাযোগ করতে পারেন।