সাইবার অপরাধীরা নানাবিধ নতুন পন্থা অবলম্বন করে অপরাধের জাল বিস্তার করেই যাচ্ছে। সুরক্ষিত নেই কোনো মাধ্যমই। ফেসবুক থেকে শুরু করে জি-মেইল, ইনস্টাগ্রাম সব জায়গাতেই তাদের বিচরণ। আপনার ফোন হ্যাক করে হাতিয়ে নিচ্ছে ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খবরাখবর।
জি-মেইল থেকে শুরু করে ফেসবুক, ফিশিং স্ক্যামের জন্য আর কোনো প্ল্যাটফর্ম বাকি রাখেনি স্ক্যামাররা। এক একটা আক্রমণ ধরা পড়ার পর যখন মানুষজন সতর্ক হবেন, আর একটা নতুন স্ক্যামিং পদ্ধতি নিয়ে আসবে জালিয়াতরা।
বর্তমানে ফেসবুকে মেসেজের মাধ্যমেই চলছে স্ক্যামিং। বহু ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে একটি নির্দিষ্ট মেসেজ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর তার নিচেই থাকছে একটি লিঙ্ক। সেই লিঙ্কে ক্লিক করেই বিপদ ডেকে আনছেন ব্যবহারকারীরা।
এবারের এই ফিশিং স্ক্যামটি চালানো হচ্ছে মূলত ফেসবুক মেসেঞ্জারেই। হঠাৎ করে চলে আসছে মেসেজটা, যাতে লেখা হচ্ছে, “লুক হোয়াট আই ফাউন্ড”। অর্থাৎ “দেখ আমি কী পেয়েছি”। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেসেজটি সামান্য হলে কী হবে, ব্যবহারকারীদের বড়সড় ক্ষতি হতে পারে।
মেসেঞ্জারে “লুক হোয়াট আই ফাউন্ড” টেক্সট মেসেজের সঙ্গে পাঠানো হচ্ছে গুচ্ছের ইমোজিও। লিঙ্কে ক্লিক করলে ইউজারদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে একটি ওয়েবপেজে। সেই ওয়েবপেজে ফেসবুক ব্যবহারকারীকে বলা হচ্ছে, তার লগইন ক্রেডেনশিয়ালস দিতে অর্থাৎ ফেসবুকের লগইন আইডি, পাসওয়ার্ড এগুলো দিয়ে দিতে।
আপনি একবার সেই সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য দিয়ে দিলে আপনার স্পর্শকাতর এবং একান্ত গোপনীয় তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে ব্যবহারকারীরা। আর তার মধ্যে দিয়ে আপনার ডিভাইসে তা সে স্মার্টফোন হোক বা ল্যাপটপ কিংবা ডেস্কটপ ইনস্টল করা হচ্ছে ম্যালওয়্যার। সেখান থেকে আপনার আরও তথ্য জেনে নিচ্ছে স্ক্যামাররা। হতে পারে তা আপনার ব্যাঙ্কের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
তবে ইদানিং স্ক্যামাররা নতুন ব্যক্তিদের পাশাপাশি এই ধরনের প্রতারণামূলক বার্তা পাঠাচ্ছে পরিচিতদের কাছেও। অর্থাৎ যাদের অ্যাকাউন্ট তারা আগেও হ্যাক করেছিল। আর এটাই হলো, তাদের একটি নতুন ফন্দি! এভাবেই তারা সক্রিয় থেকে অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে সাম্প্রতিক অতীতে।
এই মেসেজ আপনি পেতে পারেন অপরিচিত কারো কাছ থেকে। কিংবা অনেকেই অভিযোগ অভিযোগ করছেন এই ধরনের প্রতারণামূলক মেসেজ পরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়ার। পরিচিত কারো কাছ থেকে মেসেজ পেয়ে থাকলে ধরে নিতে হবে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি এই ভাবেই হ্যাক করা হয়েছে।
এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইবার সিকিওরিটি এক্সপার্ট লেসলি সিকোজ় বলছেন, ফেসবুকের বন্ধুদের কাছ থেকে আসা এমন মেসেজে ব্যবহারকারীদের ক্লিক করার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গিয়েছে। অপরিচিতরা কী মেসেজ পাঠালেন, তা অনেকে খুলেও দেখেন না।
যদিও এমন স্ক্যামিং মেসেজ আসা কিংবা হ্যাকিং নতুন কিছু নয়। তবে আপনি নিজেই সতর্ক হোন যে কোনো লিঙ্কে ক্লিক করার ক্ষেত্রে। পরিচিত কেউ পাঠালেও যাচাই বাছাই করে তবেই লিঙ্কে ক্লিক করুন।