দেশে মোবাইল টাওয়ার থেকে ছড়ানো রেডিয়েশন মান অনেক সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। রেডিওফ্রিকোয়েন্সি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডস (ইএমএফ) রেডিয়েশনের নিরাপদ মাত্রা সর্বোচ্চ ২ দশমিক ১০৬ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশে এই মান শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশের মধ্যে। ফলে এতে মানবদেহ ও পরিবেশের ক্ষতি করছে না।
তেজষ্ক্রিয় (রেডিয়েশন) মান পরিমাপক পরীক্ষায় এমন তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি)। সম্প্রতি দেশের চার বিভাগের ১১ জেলায় পরীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির প্রকৌশল ও প্রতিপালন বিভাগের উপ-পরিচালক ড. শামসুজ্জোহা।
তিনি জানান, মোবাইল রেডিয়েশন নন-আয়োনাইজিং। এর শক্তি খুব কম। ফলে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই। তারপরও দেশজুড়ে স্থাপিত টাওয়ারগুলো যথাযথ মান মেনে স্থাপন করা হয়েছে কি না, বিটিআরসি তা নিয়মিত পরীক্ষা করছে।
ড. শামসুজ্জোহা বলেন, সম্প্রতি ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও রংপুর বিভাগের ১১টি জেলায় এ পরীক্ষায় আমরা দেখতে পেয়েছি সেখানে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ইএমএফ রেডিয়েশন গ্রহণযোগ্য সীমার চেয়ে অনেক কম রয়েছে।
বিটিআরসির পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজ, টাউন হল, আনন্দমোহন কলেজ, মেডিকেল কলেজ, পাসপোর্ট অফিস ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার আশেপাশের এলাকার টাওয়ার; জামালপুরের বেলতিয়া বাজার, নন্দিনা বাজার, ইউনাইটেড স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ফেরিঘাট বাস স্ট্যান্ড, ডিসি অফিস, আশেক মাহমদু সরকারি কলেজ, পাঁচরাস্তা মোড়, শেখ ফজিলাতুন্নেসা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও তার আশেপাশে পরীক্ষা চালানো হয়।
প্রকাশিত আটটি স্পটের ফলাফল অনুযায়ী, ইএমএফ রেডিয়েশনের নিরাপদ মাত্রা সর্বোচ্চ ২ দশমিক ১০৬ হলেও পরীক্ষা চালিয়ে তা পাওয়া গেছে শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশের মধ্যে। অন্য বিভাগগুলোতেও পরীক্ষায় একই ধরনের স্বস্তির ফল পাওয়া গেছে।
এদিকে, চলতি সপ্তাহে আরও একটি প্রতিবেদন এবং পরের সপ্তাহে আরেকটি বিভাগের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। দেশে নিয়মিত রেডিয়েশন পরীক্ষা চালানো হচ্ছে জানিয়ে ড. শামসুজ্জোহা বলেন, বিটিআরসি এ রেডিয়েশন পরীক্ষায় যে যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছে, তা মিলিটারি গ্রেডের।
এর আগেও দেশে এমন পরীক্ষা চালিয়েছে বিটিআরসি। তখনো কোথাও নির্ধারিত সীমার বেশি রেডিয়েশন পাওয়া যায়নি। ফলে মোবাইল টাওয়ারে ব্যবহার করা যন্ত্রপাতির ইএমএফ রেডিয়েশন আইটিইউ, ডব্লিউএইচও ও আইসিএনআইআরপি অনুযায়ী জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নির্দিষ্ট মানদণ্ড আছে। যা মোটেও জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক নয়।