দেশের ই-কমার্স খাত এখন অনিশ্চয়তার অন্ধকার গলিপথে। এক সময়ের দৌর্দণ্ড প্রতাপে চলা এই খাত যেন এখন বাতি নিভু নিভু দশায়। একের পর এক প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে নিচ্ছে ব্যবসা, বড় বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, আর গ্রাহকদের মধ্যে ফিরে এসেছে অনাস্থা ও আশঙ্কা।
বিশ্বখ্যাত চায়নিজ জায়ান্ট আলিবাবা অধিভুক্ত দারাজ যখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়, তখন থেকেই গুঞ্জন—বাংলাদেশে দারাজ ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। এর মধ্যেই শোনা যাচ্ছে, প্রতিষ্ঠানটির একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা ছাঁটাই হয়েছেন এবং অনেক বিভাগে কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।
বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজ নিয়ে সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে “দারাজ বন্ধ হচ্ছে” শীর্ষক এক গুজব। এ নিয়ে অনলাইন ব্যবহারকারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া—কেউ বলছেন এটি সত্য, আবার কেউ বলছেন এটি নিছক একটি গুজব মাত্র।
দারাজের অফিশিয়াল কোনো ঘোষণায় এমন কিছু উল্লেখ করা হয়নি যে তারা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে প্ল্যাটফর্মটির কিছু পরিবর্তন, যেমন: ডিসকাউন্ট কমে যাওয়া, ডেলিভারি সমস্যার অভিযোগ এবং কিছু সেলার বন্ধ হয়ে যাওয়া—এসব বিষয়কে ঘিরেই মূলত গুজবের সূচনা।
ই-কমার্স বিশেষজ্ঞদের মত “এই খাতটিকে বাঁচাতে হলে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। নইলে আমরা যে সম্ভাবনার কথা বলতাম, সেটা শুধুই গল্প হয়ে থাকবে।”
কোথায় সমস্যা?
বিনিয়োগ না থাকা
সময়মতো পণ্য ডেলিভারির ব্যর্থতা
গ্রাহক সেবা নিয়ে অভিযোগ
আইনগত ও প্রশাসনিক দুর্বলতা
ব্যবসায়িক মডেলে ঘাটতি
তবে শুধু দারাজ নয়—ইভ্যালি, ইঅরেঞ্জ, দারাজসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের টালমাটাল অবস্থার প্রভাব পড়েছে সামগ্রিক খাতেই। বিশ্বাসের জায়গায় চিড় ধরেছে, যার ফলে অনলাইন কেনাকাটায় ভরসা হারাচ্ছেন গ্রাহকরা।
এই সংকটকে পুঁজি করে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোও বাংলাদেশের বাজার থেকে ‘পা গুটিয়ে নিতে’ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ।