সম্প্রতি কোভিড-১৯ মহামারীটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় সারা দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। এই সঙ্কটপূর্ণ অবস্থায় দেশের এসএমই খাতকে সহায়তার জন্য আলিবাবা গ্রুপের অঙ্গ সংগঠন দারাজ বাংলাদেশ (daraz.com.bd) “ডিএক্সপোর্টস” নামক একটি নতুন উদ্যোগ চালু করেছে। আলিবাবা গ্রুপ এবং দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের মধ্যকার সহযোগী সম্পর্কের ফলস্বরূপ, ডিএক্সপোর্টস প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এখন বাংলাদেশের স্থানীয় বিক্রেতারা সহজেই আন্তর্জাতিক বাজাররের অ্যাক্সেস পাবে এবং বিশ্বজুড়ে কয়েক লক্ষ ক্রেতার সাথে সংযোগ স্থাপনের একটি বিশাল সুযোগ পাবে।
ডিএক্সপোর্টস প্রোগ্রামের মাধ্যমে একজন বাংলাদেশী সেলার বা বিক্রেতা বিশ্বের বৃহত্তম অনলাইন ওয়েবসাইট আলিবাবা ডটকমের বিশেষ অ্যাক্সেস উপভোগ করতে পারবে। এই বিশেষ অ্যাক্সেসটি ব্যবহার করে স্থানীয় বিক্রেতারা দেশীয় পণ্যগুলির বিক্রয়ের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবে। এটি রফতানির সুযোগ, সরকারী রাজস্ব আয় এবং কর্মসংস্থানের একটি নতুন দ্বার উন্মুক্ত করবে। এই উদ্যোগটির মূল উদ্দেশ্যগুলো হল- আমাদের দেশের এসএমই ( ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা) বিভাগকে শক্তিশালী করা, আলিবাবা ডট কমের মাধ্যমে এসএমই বিভাগকে বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেওয়া, প্ল্যাটফর্মটিতে নিবন্ধিত ২ কোটিরও বেশি ক্রেতার সাথে ব্যবসা স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি করা, স্থানীয়/দেশীয়পণ্যগুলিকে ব্র্যান্ডে পরিণত করা ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক বিকাশ করা।
আলিবাবা গ্রুপ ২০১৮ সালে দারাজ (daraz.com.bd) অধিগ্রহণ করার পর বাংলাদেশের ইকমার্স ক্ষেত্রে উন্মুক্ত হয় নানা সম্ভাবনা। তারপর থেকে, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বিকাশের জন্য প্রযুক্তি এবং অনলাইন বাণিজ্যে দারাজ বাংলাদেশ আলিবাবা গ্রুপ কে দক্ষতার পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছে এবং আলিবাবা ডটকমের স্ট্র্যটেজিক চ্যানেল পার্টনার হয়ে উঠেছে। তারই একটি অংশ হিসেবে স্থানীয় ব্যবসাকে বিশ্বব্যাপী নেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানটি “ ডিএক্সপোর্টস” চালু করেছে।
দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের এই সুযোগটি কাজে লাগাতে সাহায্য করতে ভবিষ্যতে দারাজ বাংলাদেশ স্থানীয় রফতানিকারকদেরকে বিনামূল্যে ই-কমার্স এডুকেশন, ই-কমার্স অপারেশন, এবং কাস্টমার সাপোর্ট সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ দেবে।
২২ শে জুন দারাজ ফেসবুক পেজে একটি ডিজিটাল প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যেমে নতুন উদ্যোগটির উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। এই ডিজিটাল প্রেস কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও এক্সপোর্ট প্রোমোশন ব্যুরোর চেয়ারম্যান টিপু মুনশি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক ও এক্সপোর্ট প্রোমোশন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান এ.এইচ.এম. আহসান। বিশেষ অতিথি বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আলিবাবা ডটকমের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফেলিক্স ইয়াং।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন “আমরা বিশ্বাস করি ‘ডি-এক্সপোর্টস’ প্রোগ্রামটি স্থানীয় ব্যবসা গুলোকে বৈশ্বিক অঙ্গনে পারফর্ম করার সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি আগামী বছরগুলোতে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগ লাইনটিকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি দিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে”।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, ১৯০টি দেশ ও অঞ্চলের ১ কোটির বেশি ব্যবসায়ী এই প্ল্যাটফর্মে পণ্য বিক্রি করে থাকেন যার মাধ্যমে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাগুলোকে আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে দিতে পারবে । এর ফলে আমাদের দেশি পন্যগুলো এখন থেকে আমাদের দেশে নয় সারা বিশ্বে বিক্রি করার সুযোগ পাব । বিজনেস-টু-বিজনেস বা ব্যবসায়ী থেকে ব্যবসায়ীর মাধ্যমে আমাদের নতুন উদ্যোক্তারা লাভবান হবেন ।
এ উপলক্ষ্যে দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের (daraz.com.bd) ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ মোস্তাহিদল হক বলেছেন “আমি আশা করছি, দেশের এই ক্রান্তিকালে দারাজের এই নতুন উদ্যোগটি বাংলাদেশের ব্যবসা ও অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক ফলাফল আনতে সক্ষম হবে। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি দারাজ বাংলাদেশ কাজ করে চলেছে দারাজ স্টোর, দারাজ ভিলেজ ও নন্দিনী প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্যোক্তা (ই-বাণিজ্য ব্যবসায়ী) তৈরির লক্ষ্যে এবং সেই উপলক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে ৫০০ কোটি টাকা”।