রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা খাদিজা ফারহানা অনলাইনে খাবারের ব্যবসা করেন। দ্রুত বেশি ক্রেতার কাছে পৌঁছাতে বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপের সদস্য হন তিনি। কিন্তু হঠাৎ কয়েকটি গ্রুপ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এই নারী উদ্যোক্তা।
খাদিজা ফারহানা বলেন, ‘আমি যেহতু হাউজওয়াইফ। এই খাবার দিয়েই আমার আয় করা শুরু। আর এটা থেকেই আমি নিয়মিত আয় করছিলাম। এখন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমার সবকিছুই বন্ধ।’
একই অবস্থা মিরপুরের ফ্লোরিডা শারমিনেরও। তিন বছর ধরে বেশ কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করছিলেন তিনি। আগে দিনে অন্তত ৩০০টি অর্ডার পেতেন। গ্রুপগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে।
ফ্লোরিডা শারমিন বলেন, ‘আমার নিজের ইনকাম তো বন্ধ হয়েছেই। আমার এখানে যারা কাজ করেন তাদের বেতনটা আমি কতদিন দিতে পারব সেটা আমি এখন বলতে পারছি না।’
দু্ই মাসে ব্যবসায়ীদের ২০টি গ্রুপ নিষ্ক্রিয় করেছে ফেসবুক। তাদের বিরুদ্ধে শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ সংস্থাটির।
ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্রুপগুলো বন্ধ হওয়ায় ১০ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা বিপাকে পড়েছেন।
ই-ক্যাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার নিশা বলেন, ‘নারী উদ্যোক্তারা যারা ফেসবুকের মাধ্যমে কাজগুলো করতেন। এরকম অনেক উদ্যোক্তা সম্বলিত গ্রুপ ডিসাবেল হয়ে গেছে। এতে সেই উদ্যোক্তারা দিশেহারা। ফেসবুক এআই দিয়ে সাপোর্ট সেন্টার চালাচ্ছে। তাদের সাথে আমরা সময় সময় যোগাযোগ করছি। সমস্যাগুলো তাদের সাথে শেয়ার করছি।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ফেসবুক অনেক কাজ রোবট দিয়ে করছে। তাই শর্ত ভঙ্গের কিছু পেলেই গ্রুপ নিষ্ক্রিয় করে দিচ্ছে। ব্যবসায়ীদের, বিটিআরসির সহযোগিতা নিতে বলছেন তারা।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা বলেন, ‘ডিবির একটা সাইবার ক্রাইম ইউনিট আছে পাশাপাশি কাউন্টার টেররিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিট আছে। তারা সরাসরি আপনার এপ্লিকেশনটা যাচাই বাছাই সাপেক্ষে বিটিআরসিতে পাঠিয়ে দেবে। বিটিআরসি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে লিগাল ডকুমেন্ট সাপেক্ষে সেটা সাবমিট করবে।’
দেশে এফ-কমার্স ব্যবসায়ী রয়েছে ৬ লাখের বেশি। যার বেশিভাগই নারী।