আবারও আগামী ২ বছরের মধ্যে দেনা পরিশোধের আশ্বাস দিলেন আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মো. রাসেল। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি গ্রাহকদের প্রায় ৫০০ কোটি টাকা পাওনার মধ্যে গত ছয় মাসে মাত্র আড়াই কোটি টাকা পরিশোধ করে এখন এর প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল বলছেন, আরও দেড় বছর সময় চায় তার, তাহলে পুরো পাওনা মিটিয়ে দিতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে অনলাইনে সংবাদ সম্মেলনে এসে গ্রাহকদের প্রতি ‘আকুতি’ জানিয়ে রাসেল বলেন, “আপনারা আইনের আশ্রয় নিলে আমরা ধারাবাহিকভাবে কাজ করতে পারি না। তাই বিশ্বাস যেহেতু রেখেছিলেন, বিশ্বাস রাখুন; আর একটু সময় দেন।”
ইভ্যালির তথ্য অনুযায়ী, তাদের প্রতিষ্ঠানে ২ লাখ গ্রাহকের ৩ লাখ অর্ডার আটকে রয়েছে অর্থাৎ অর্ডার করে পণ্য বুঝে পাননি এসব গ্রাহক; যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।
তিনি বলেছেন, গত ছয় মাসে সাড়ে তিন লাখ ইনভয়েস থেকে আয় হয়েছে তিন কোটি টাকার মতো। এ থেকে নিট আয় হয়েছে আড়াই কোটি টাকা। হিসাব অনুযায়ী, ইভ্যালির ফাইন্যান্সিয়াল ভ্যালু ৫০ কোটি টাকার মতো। একক মালিকানায় আমি বিনিয়োগ পেতে ব্যর্থতা ঘুচতে এখন আমি আশা করি ব্যবসায় উন্নয়নের মাধ্যমে ইভ্যালি শেয়ার বাজার থেকেও বিনিয়োগ আহরণ করতে পারবে। ইভ্যালির অ্যাসেট ভ্যালু রয়েছে তা আশার বিষয়। বাজার থেকে দুই-আড়াই শ’ কোটি টাকা আহরণ সম্ভব। কেননা, ইভ্যালি প্রফিটেবল, অ্যাফোর্ডেবল তা প্রমাণ করা যাচ্ছে।
রাসেল বলেন, গত সপ্তাহেও আমি দুইটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি। আগেও যখন কথা বলেছিলাম তখনো গ্রেফতার হওয়ার অনেকটা সফলতার কাছাকাছি ছিলাম। আশা করি, ২০২৪ সালের মধ্যে নতুন বিনিয়োগ পাবো।
এক প্রশ্নের উত্তরে ইভ্যালি এমডি জানিয়েছেন, আশাকরছি, আগামী মাসে টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক হলে ফিজিক্যাল অফিস করা সম্ভব হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে রাসেল বলেন, আমি আত্মগোপনে নেই। আমি পালিয়ে নেই। এই কথা শুনলে আমার সবসময়ই হাসি পায়। তবে সবশেষে আমি গ্রাহকদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সরকারের মনিটরিংয়েও আমি উপকৃত হচ্ছি। অবশ্য পাওয়ার খাটিয়ে কেউ যদি বকেয়া আদায় করতে গেলে আমি কলাপস করবো। আমাদের চিপড়াইলে এখন কিছুই বের হবে না।
দুই বছরের মধ্যে দেনা পরিশোধের কথা দেওয়া বিষয়ে তিনি বলেছেন, গত ৬ মাসের নিট লাভ থেকেই এই বিষয়টি অনুমান করা সম্ভব। আশাকরি ২০২৪ সালেই আমরা একটি ব্রেক থ্রু করবো। আগামী দুই মাসের মধ্যে মিডিয়া ও সেলারদের বকেয়া পরিশোধ করবো। আগামী দুই বছরের মধ্যেই সকল দেনা পরিশোধ করতে পারবো।
নতুন দুই প্রজেক্ট নামাচ্ছেন রাসেল
ইভ্যালির সঙ্গে আরও দুটি লোভনীয় প্রজেক্ট শুরু করতে যাচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য দিয়েছেন মোহাম্মদ রাসেল। একটি প্রজেক্টের নাম ‘বিসেলার’, যা বিভিন্ন দেশে যুক্ত হয়ে কাজ করবে। তরুণরা সেখানে খণ্ডকালীন কাজ করতে পারবেন। এটা মূলত পণ্য বিক্রির একটা সাইট হবে।
আরেকটা প্রজেক্টের নাম ‘সবলোন’, যার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে পণ্য সরবরাহ করা হবে। এখানেও রয়েছে মোহাম্মদ রাসেলের লোভনীয় প্রস্তাব। বলেছেন, “ডিরেক্ট ডলার আয় করব আমরা। এই প্রজেক্ট যদি আমাদের শুরু হয়, তাহলে খুব ভালো চলবে বলে আমার বিশ্বস। প্রায় ১০টি দেশে আপাতত শুরু করব।”