দই উৎপাদিত হয়ে আসছে ৪৫০০ বছর ধরে। দই পৃথিবীর পুরনো খাবারগুলির মধ্যে অন্যতম, যা এখনও সমাদৃত। বলতে গেলে এর চাহিদা কমেনি টিকে আছে সাড়ে চার হাজার বছর ধরে।
দই খেলে আমাদের দেহের পাকস্থলীর উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে। যা আমাদের শরীর জন্য অত্যন্ত ভালো ভূমিকা রাখে, তাই খাদ্য তালিকায় দই এর রয়েছে চাহিদা। আমরা সাধারণত একদম জমে যাওয়া দই খেয়ে অভ্যস্ত। বাংলাদেশের জিআই পণ্য বগুড়ার দই এর দারুন জনপ্রিয়তার কারনে মিষ্টান্ন হিসেবেই দই বেশি পরিচিত। তবে হালকা মিষ্টি বা চিনি ছাড়াও দারুণ দই হয়। এতটা জমাট ছাড়াও দই হয়। যা ডায়েটে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন দেশের নানারকম রেসিপিতে দই এর রয়েছে ভিন্নতা। যেমন আমাদের দেশের বগুড়ার মিষ্টি দই ছাড়াও বরিশালের দই, নোয়াখালীর মহিষের টক দই, পুরান ঢাকার টক মিষ্টি দই ইত্যাদি। এছাড়াও বিভিন্ন জেলাতে আলাদা আলাদা স্বাদের দই পাওয়া যায়। দুধ এর পার্থের কারনে। আবহাওয়ার পার্থক্য থাকায় দই এর স্বাদ ভিন্ন হয়ে যায়।
বর্তমানে ই-কমার্স এর প্রসারের দরুন দই নিয়ে হোমমেইড খাবার উদ্যোক্তারাও কাজ করছেন। হোমমেইড হওয়ার আগ্রহের সাথে নিয়মিত খাদ্য তালিকায় যুক্ত করছেন ক্রেতারা।
প্রতিদিন দই আমাদের পুষ্টির ঘাটতি পূরনে অনেক সহায়ক খাদ্য হিসেবে কাজ করতে পারে। দই হচ্ছে দুধ থেকে তৈরী একটি খাবার যা হজমে সহায়ক। টক এবং মিষ্টি দুই রকমের দই হতে পারে, বর্তমানে দই যারা তৈরী করেন তারা নানা রকমের দই তৈরী করে থাকেন। আমরা জানি ননীযুক্ত দুধ এ আছে ফ্যাট তাই অনেকে দুধ খায় না বা এরিয়ে চলে। এ ক্ষেত্রে তাদের জন্য দই হতে পারে দুধের বিকল্প। অন্যান্য খাবার হজমেও সহায়তা করে দই।
এছাড়াও দই এ আছে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম, তাই পুষ্টিকর এই দই আমাদের খাবারের তালিকায় যুক্ত করা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।
মাছ, মাংস এমনি সবজি রান্না বা সালাদে আমরা দই ব্যবহার করে পুস্টি ও সাধ দুইই বাড়াতে পারি।
বাচ্চাদের বিভিন্ন রকম মিল্কশেক তৈরী করতেও দুধের পরিবর্তে টক দই / মিষ্টি দই দিয়ে সাথে বাদাম, খেজুর কুচি যুক্ত করতে পারেন।
সর্বোপরি আদর্শ খাদ্য দুধ এর বিকল্প হিসেবে টক দই বা মিষ্টি এর ব্যবহার খুবই উপকারী।
গরমের দিনে তৃষ্ণা ও পুষ্টি একসাথে মেটাতে পারে যে খাবারটি তা হলো দই। টক দই খাওয়াটা সবচেয়ে উপকারী, আর হালকা মিষ্টি দইও খাওয়া যেতে পারে। ক্যালসিয়াম এর চাহিদা পুরনের পাশাপাশি তা আমাদের খাবারের বৈচিত্র্য এনে দিতে পারে।
টক দই খাবার হিসেবে যতটা জনপ্রিয় তার চেয়েও বেশি জনপ্রিয় রান্নার উপকরণ হিসেবে। আবার রুপচর্চা, কেশ চর্চাতেও এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে এর স্বাস্থ্য গত দিক বিবেচনা করে।
কেন হোমমেইড দই খাবেন?
হোমমেইড দই এখন চাইলে ঘরে বসে অর্ডার করা যায়। হোমমেইড খাবারের উদ্যোক্তারা সেই খাবারটি আমাদের পাঠান যেমন খাবার তারা তাদের পরিবারের জন্য তৈরী করে থাকেন। এখানে আমরা যদি কোন রেস্টুরেন্টের খাবারের সাথে তুলনায় আসি তবে তা মিলবে না তাই। এখানে খাবার মজাদার বাড়ির স্বাধ পাওয়ার পাশাপাশি একটি আস্থা সম্পর্ক তৈরী হয়। আমরা আমাদের টেস্ট জানিয়ে দই তৈরী করতে নিতে পারি হোমমেইড খাবার উদ্যোক্তাদের থেকে। দই এর টক মিষ্টির কাস্টমাইজ করার সুযোগ একমাত্র হোমমেইড দই তেই করার সুযোগ আছে। নানারকম দই এর স্বাধ এর মধ্যে আছে: টক দই, টক মিষ্টি দই, হালকা মিস্টি দই, মিষ্টি দই, স্বর দই, লো ফ্যাট দই (স্বর বিহিন টক দই)।
তাই আমরা নিজের পছন্দমতো স্বাদ অনুযায়ী দই খেতে চাইলে হোমমেইড খাবার উদ্যোক্তাদের উপর ভরসা করতে পারি। এছাড়াও স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনা করে, বিশেষ করে টক দই বা সুগার ফ্রি মিষ্টি দই হতে পারে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী খাবার। শুধু কি তাই হোমমেইড দই ব্যবহার করে রোগীর জন্য হোমমেইড খাবার উদ্যোক্তারা নতুন রেসিপি তৈরী করেছেন। হোমমেইড দই দিয়ে নিশ্চিতে তা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য তৈরি শর্মা, স্যান্ডুইচে সস হিসেবে ব্যবহার করা যায়, যার ফলে রোগী মজা করে খেতে পারেন এবং তার স্বাস্থ্যগত ঝুকিও কমে যায়। এভাবে হোমমেইড দই ব্যবহার করে হোমমেইড খাবার উদ্যোক্তারা রোগীদের নতুন মুখোরচক খাবারের স্বাধ গ্রহনের সুযোগ দিয়ে থাকেন।
দই দিয়ে বানানো নানারকম আয়োজন যেমন: রায়তা, পাপড়িচাট, মাঠা, কোরমা, দই ফুচকা, দই বড়া, দই চিড়া, লাচ্ছি, বোরহানি, লাবাং, স্মুদি, রাজকচুরি ইত্যাদি।
এই খাবারগুলিতে হোমমেইড দই এর ব্যবহার আমাদের জন্যই আলাদা স্বস্তি যোগ করে অবশ্যই, আর তাই হোমমেইড দই এর বাজার তৈরী হচ্ছে। এর মাধ্যমে হোমমেইড দই এর উদ্যোক্তার কর্মসংস্থান হওয়ার পাশাপাশি ক্রেতাদের ঘরে বসেই অনলাইনে অর্ডার করে ঘরে বানানো দই খাওয়ার সুযোগ হচ্ছে।
আমরা অনেকেই চিনি ছাড়া খাবার খাওয়ার কথা চিন্তা করতে পারি না। কিন্তু চিনি ছাড়া খাবার অনেক এনার্জেটিক হয়। খাওয়ার অভ্যাস করা গেলে তা আমাদের কাজ করার ক্ষমতা ইচ্ছা বাড়াবে এর পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধির ঝুকি কমিয়ে থাকে।আমাদের দেশে দিন দিন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, অতিরিক্ত ওজন থেকে নানা জটিল রোগের রোগীর পরিমান বাড়ছে, ডাক্তারের পরামর্শ মতো দই খাদ্য তালিকায় যুক্ত করে অনেকে উপকৃত হয়েছেন, এক্ষেত্রে তারা যদি হোমমেইড দই বেছে নেন তা এখন অসম্ভব নয় কারন হোমমেইড টক দই বা কম মিষ্টির দই এখন হোমমেইড খাবার উদ্যোক্তা হোম ডেলিভারি করছেন যা কয়েকবছর আগে আমরা চিন্তাও করতে পারতাম না।
দই এমন একটি খাবার যা কিনা ঢাকার মিস্টির দোকান, এমনি মুদির দোকানেও বেশ সহজলভ্য, তবে আমরা যদি ঘরে বানানো দই খেতে পারি তা হবে অনেক বেশি স্বাস্থ্য সম্মত। হোমমেইড খাবারের উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে আমরা এখন হোমমেইড দইও ঘরে বসে অর্ডার করতে পারছি। কাস্টমার কে গুরুত্ব দেয়া, তার চাহিদা মত কাস্টমাইজ মিষ্টি কিংবা টক দই বানানো এটা হোমমেইড খাবার এই সম্ভব, এটা আমাদের জন্য খুব ভালো হয়েছে সবমিলিয়ে।
দই তৈরী হয়ে যাবার পর ফ্রীজে বা ঠান্ডা জায়গায় রাখা ভালো। স্বাভাবিক তাপমাত্রা তে দই ১ দিন ভালো থাকে, গরমে এক দিনের বেশি স্বাভাবিক তাপমাত্রাতে রাখা যাবে না। ফ্রিজে ৪-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এক সপ্তাহ দই ভালো থাকে। আর ডীপ ফ্রিজে রেখে এক মাস দই সংরক্ষণ করে খাওয়া যেতে পারে।
হোমমেইড খাবার এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবন এ অতি প্রয়োজন, বিশেষ করে যারা নিজেরা খাবার তৈরী করে খেতে পারেন না তাদের জন্য হোমমেইড খাবারের সেবা অত্যন্ত উপকারী। কোন কারনে বাসায়, হসপিটালে বা অফিসে খাবারের প্রয়োজন হলে হয়ত বাইরের রেস্টুরেন্টের উপর নির্ভর করতে হয়, তারা চাইলেও একটা সময় ঘরের খাবার অর্ডার করতে পারত না কিন্তু এখন আর তা অসম্ভব নয়। ই-কমার্স এর কল্যাণে ঘরে বানানো খাবার নিয়ে উদ্যোগ শুরু করেছেন অনেকে সেখানে রেগুলার খাবার থেকে শুরু করে অতি পুষ্টিকর হোমমেইড দইও পাওয়া সম্ভব।
ফারহানা ইয়াসমিন
সত্তাধিকারি আন্ধনঘর