বিগত কয়েক বছর ধরে টিকটক বেশ কিছু কারণে নানাভাবে আলোচিত এবং সমালোচিত । বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় একটু বেশি লক্ষ্য করা যায় ।তার পেছনের মূল কারণ টিকটক কেলেঙ্কারি। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের টিকটক কেলেঙ্কারির কারণে একদিকে যেমন ধীরে ধীরে অন্যসবও সোসাল প্লাটফর্ম কলংকময় হচ্ছে এবং একই সাথে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এর নির্মাতারাও । আর এমনই কিছু টিকটক কেলেঙ্কারি নিয়ে সাজানো হয়েছে এই আর্টিকেল ,যেগুলো হয়তো জেনে থাকলে পরবর্তীতে টিকটক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা খুব কম।
কিশোর গ্যাং তৈরি, রাস্তা অবরোধ করে ভিডিও নির্মাণ, হানাহানি-খুনাখুনি
বিগত কিছু বছরে এর প্রবণতাটা বেশ বেড়ে গিয়েছে ।এবং তার পেছনের মূল কারণ হলো টিকটক ভিডিও ক্রিকেটাররা। অবশ্য তাদের দাবি সারা বাংলাদেশকে নাকি প্রতিনিয়ত রিপ্রেজেন্ট করে চলে এরা। তবে আদৌ কখনো বেকার যুব সমাজ একটি ভূখণ্ডকে রিপ্রেজেন্ট করতে পারেনা ।বরং বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটে ঠিক উল্টোটা। টিকটক ভিডিও নির্মাণ করতে গিয়ে কিশোর গ্যাং তৈরি ,রাস্তা অবরোধ করে ভিডিও নির্মাণ, প্রকৌশলীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া এবং অতঃপর জেলে যাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। বিশেষ করে গেল বছর ২০২০ সালের প্রবণতা অনেকাংশে বেড়ে যায়। অবশ্য বর্তমানে কর্তৃপক্ষদের তৎপরতার কারণে অবস্থা বেশ নিয়ন্ত্রণে!
টিকটকের নামে গণধর্ষণ
গাজীপুরের টঙ্গী থেকে টিকটকে অভিনয়ের সুযোগ দেয়ার কথা বলে ঢাকায় এনে গণধর্ষণের ঘটনা । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে টিকটক সেলিব্রেটি পরিচয় দানকারী শিশির ব্যাপারীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে ভুক্তভোগীর। অভিনয়ের আশ্বাস দিয়ে ২৩ ডিসেম্বর বিকেলে টঙ্গী থেকে ওই কিশোরীকে ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকায় নিয়ে যান অভিযুক্তরা। পরে একটি বাসায় আটকে তাকে গণধর্ষণ করা হয়।
নকল সেলিব্রেটিঃ
ইদানিং কে না সেলিব্রিটি হতে চায় না বলুন। একটা সময় ছিল যখন সেলিব্রেটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার জন্য মানুষ বই লিখত, বড় বড় ট্যালেন্টহান্ট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করত এবং নিজেকে প্রমাণ করে সেলিব্রিটির মুকুট ছিনিয়ে আনতে।
তবে সেলিব্রেটি হওয়ার একটি শর্টকাট মাধ্যম বাতলে দিয়েছে টিকটক । যার ফলে এখন যে কেউই নিজেকে সেলিব্রিটি প্রমাণ করেন অন্যের কাছ থেকে স্বার্থ হাসিল করে নিচ্ছে। অনেক সময় নিজেকে সেলিব্রিটি প্রমাণ করে বিশেষ সুবিধা ভোগের ঘটনাও ঘটে।
টিকটক বটঃ
টিকটক বট হল এমন এক ধরনের ভার্চুয়াল রোবট যেটি ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ের মধ্যেলাখ লাখ ফেক ফলোয়ার তৈরি করা সম্ভব । আপনি যদি একজন টিকটক ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই লক্ষ্য করে থাকবেন কিছু কিছু অ্যাকাউন্ট রয়েছে যাদের ফলোয়ার কিনা বড় বড় সেলিব্রেটিদের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ বেশি হয়ে থাকে । মূলত এই সকল ফেক ফলোয়ার এর মাধ্যমেই তারা নিজেদেরকে সেলিব্রিটি প্রমাণ করেন। অনেক সময় বেআইনিভাবে কেনাবেচা হয়ে থাকে এ সকল একাউন্ট ।তবে তা কেবল মাত্র প্রচার এবং প্রসার এর কাজে । কিন্তু ক্রেতা তো আর জানে না ফলোয়ার গুলো সব ফেক । কেবল উপরে ফিটফাট ভিতরে সদরঘাট!
টিকটক ফিশিং লিংকঃ
কথাটি হয়তো মেনে নিতে অনেক কষ্ট হতে পারে ।তবে একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অধিকাংশ টিকটক ব্যবহারকারীদের সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে খুব অল্প ধারণা থাকে । টিকটক তো এমনিতেও রংবেরঙের শর্ট ভিডিওতে মেতে থাকার সোসাল প্লাটফর্ম। যার কারনে হুটহাট ফুটফাট ফিসিং লিঙ্ক এর ভেতরে ঢুকে নিজের সাইবার সিকিউরিটি সর্বনাশ ঘটায়। এবং ইদানিং এর প্রবণতাটা অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। টিকটকের তেমন কোনো সিকিউরিটি সিস্টেম চালু করা হয়নি যেগুলো কিনা এ ধরনের ফিলিংস লিংকগুলো ব্লক করতে সক্ষম। যার কারণে দিনকে দিন ব্যবহারকারীরা হারাচ্ছে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সমূহ।