একটি স্মার্টফোনের গড় আয়ু ৩-৪ বছর অর্থাৎ ৩-৪ বছর অব্দি মোটামুটি কোন সমস্যা ছাড়া একটি স্মার্টফোন ব্যবহার করা যায়। কিন্তু পণ্য সংস্কৃতি বলুন বা টেকনোলজির নেশাই বলুন, বেশির ভাগ মানুষই এতদিন অব্দি একটি স্মার্টফোন ব্যবহার করে না। স্মার্টফোনের টেকনোলজি প্রতি বছরই পরিবর্তিত হয়। প্রতি বছরই স্মার্টফোনের নতুন নতুন কিছু ফিচার চলে আসে, যার ফলে পুরোনো ফোন ব্যবহার করতে আর ইচ্ছে করে না। ২০১৬ থেকে স্মার্টফোনে আপগ্রেড হতে থাকা ইউজারের সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। কখনো কখনো তো এমনও হয় যে একটি স্মার্টফোন কেনার পাঁচ-ছ মাস পরেই আমাদের অন্য কোন স্মার্টফোন পছন্দ হয়ে যায় যার ফলে এক্সচেঞ্জ অফারে আমরা পুরনো ফোনটি বিক্রি করে দিই। কিন্তু পুরোনো স্মার্টফোন এক্সচেঞ্জ অথবা বিক্রি করার আগে আমাদের কিছু বিষয় সাবধান হওয়া দরকার নইলে আমাদের তথ্য অন্য কারও হাতে চলে যেতে পারে।
যদি আপনি অ্যান্ড্রয়েড বা iOS ব্যবহারকারী হন, তাহলে আপনার স্মার্টফোন বদলানোর আগে সমস্ত ডেটা মুছে দেওয়া উচিত। যদি আপনি স্মার্টফোনকে ফ্যাক্টরি রিসেট অথবা ডেটা ওয়াইপ করে বিক্রি না করেন তাহলে যে বা যারা এক্সচেঞ্জ করা স্মার্টফোনটি ব্যবহার করবে তাদের হাতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য পৌঁছে যাবে। আজ আমরা আপনাদের পুরানো স্মার্টফোন এক্সচেঞ্জ বা বিক্রি করার আগে কোন কোন বিষয় মনে রাখা উচিত সেই বিষয়ে কথা বলবো।
ডেটা ব্যাকআপ
আপনার পুরনো স্মার্টফোনটি পাল্টানোর আগে আপনাকে স্মার্ট ফোনের ডেটা ব্যাকআপ নিতে হবে, যাতে নতুন স্মার্টফোনে আপনার কন্ট্যাক্ট অথবা অন্য পার্সোনাল ডেটা ব্যবহার করা যায় আর তথ্য হারিয়ে যাওয়ার বিপদ না থাকে।
অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য ডেটা ব্যাকআপ
যদি আপনি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারকারী হন তাহলে আপনার স্মার্টফোনের ডেটা ব্যাকআপ করার জন্য Gmail অথবা Google অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে হবে। আপনাকে সবার প্রথমে নিজের স্মার্টফোনের সেটিংসে গিয়ে ‘সিস্টেম’ অপশন সার্চ করতে হবে। সিস্টেম অপশনে আপনি ডেটা ব্যাকআপ অপশন পাবেন। সেখানে আপনি নিজের Gmail অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ডেটা ব্যাকআপ করতে পারেন।
যদি আপনি কন্ট্যাক্টগুলিকে আলাদা আলাদা ভাবে ব্যাকআপ নিতে চান, তাহলে ফোনের সেটিংসে গিয়ে অ্যাকাউন্ট অপশনে ট্যাপ করুন। এরপর অ্যাকাউন্টের মধ্যে Sync অপশন পাবেন। সেখানে ট্যাপ করলে আপনি কন্ট্যাক্ট Sync করতে পারবেন। অ্যাকাউন্ট Sync করার পর আপনার সমস্ত কন্ট্যাক্ট আপনার Gmail অ্যাকাউন্টের সাথে লিংক হয়ে যাবে।
ফটো এবং অন্যান্য তথ্যগুলি আপনি আলাদাভাবে ব্যাকআপ নিতে পারেন। এর জন্য আপনাকে স্মার্টফোনের ফাইল ম্যানেজার অথবা ফাইল অপশনে গিয়ে গুগল ড্রাইভে ট্যাগ করতে হবে। এখানে আপনি ফাইলগুলি ব্যাকআপ নিতে পারেন। এভাবে আপনি সমস্ত ফটো, ভিডিও এবং অন্য জরুরী ফাইল ব্যাকআপ নিতে পারবেন।
iOS ব্যবহারকারীদের জন্য ডেট ব্যাকআপ
যদি আপনি আইফোন ব্যবহারকারী হন তাহলে আপনার স্মার্টফোনে ডেটা iCloud-এ ব্যাকআপ হবে। ডেটা ব্যাকআপ নেওয়ার জন্য আপনাকে সেটিংস অপশনে গিয়ে আপনার নামের জায়গায় ট্যাপ করতে হবে। এরপর iCloud ব্যাকআপে গিয়ে Daily Backup অন করতে পারবেন। তাড়াতাড়ি ব্যাকআপ নেওয়ার জন্য Back Up Now-তে ট্যাপ করতে হবে। এইভাবে আপনার স্মার্টফোনের সমস্ত ডেটা ব্যাকআপ হয়ে যাবে। আপনি চাইলে আপনার কন্ট্যাক্টগুলি Gmail অথবা Google ড্রাইভে ব্যাকআপ নিতে পারেন।
ফ্যাক্টরি রিসেট
ডেটা ব্যাকআপ নেওয়ার পর আপনার স্মার্টফোনে ফ্যাক্টরি রিসেট করা জরুরি। ফ্যাক্টরি রিসেট করার পরেই আপনার ফোন এক্সচেঞ্জ করা উচিত। স্মার্টফোনে ফ্যাক্টরি রিসেট করার জন্য ফোনের সেটিংস অপশনে গিয়ে সিস্টেমে ট্যাপ করুন। সিস্টেমে ট্যাপ করার পর ফ্যাক্টরি রিসেট করার অপশন পাবেন। এখানে আপনি Erase all data এই অপশনে ট্যাপ করলে ফ্যাক্টরি রিসেট হয়ে যাবে। এইভাবে আপনার স্মার্টফোনের সাথে লিংক করা অ্যাকাউন্ট সরে যাবে এবং ফোন আগের মত একদম ফাঁকা হয়ে যাবে। এরপর আপনি স্মার্টফোনটি এক্সচেঞ্জ করতে চাইলে অথবা বিক্রি করতে চাইলে ফোন থেকে কোন ডেটা চুরির বিপদ থাকবে না।