চীন-মার্কিন বাণিজ্য বিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে শঙ্কিত অ্যাপলসহ মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে এ মুহূর্তে এ বিরোধের চেয়ে বড় অন্য একটি সমস্যা অ্যাপলকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে: দামি আইফোনের চাহিদা ক্রমেই কমে যাচ্ছে। যেখানে কোম্পানির অন্যতম প্রধান পণ্য এটি। এমন মন্তব্য করেছেন অ্যাপলের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জন সুলি। খবর ইয়াহু ফিন্যান্স।
সম্প্রতি ইয়াহু ফিন্যান্সের দ্য ফার্স্ট ট্রেড বিভাগকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে সুলি বলেন, চীনের বাজারে অংশদারিত্ব ধরে রাখার লড়াই এখন অ্যাপলের সবচেয়ে বড় সমস্যা। কারণ সেখানে এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে মার্কিন পণ্যবিরোধী একটি মনোভাব চাঙ্গা হয়েছে। তবে এ ঘটনা অ্যাপলের জন্য সবচেয়ে ভয়ানক দুঃস্বপ্ন, এটা আমি বলব না; কারণ চীনের প্রভাব ছাড়াই এরই মধ্যে আইফোনের বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে।
জন সুলি ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত অ্যাপলের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি পেপসিকোতে অত্যন্ত সফলতার নজির সৃষ্টি করেছেন। স্টিভ জবস তাকে অ্যাপলে আনেন এবং তিনি ওই সময় অ্যাপল পণ্যের রেকর্ড বিক্রির সফলতা দেখান।
তবে সুলি ও জবসের মধ্যে কৌশল নিয়ে বিরোধ ছিল। সুলি অ্যাপলের বিদ্যমান পণ্যের বিক্রি বাড়ানোর কৌশলে বিশ্বাস করতেন, আর স্টিভ জবসের দৃষ্টি ছিল ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির দিকে। ফলে স্টিভ জবসের অসাধারণ উদ্ভাবনী চিন্তা আর স্টিভ ওজনিয়াকের কম্পিউটার জ্ঞানের বিপরীতে দাঁড়িয়ে যান সুলি। অবশেষে ১৯৯৩ সালে তাকে অ্যাপল থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।
সুলি বর্তমানে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইনভেস্টর ও পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন। তিনি এখনো সাবেক কর্মস্থল অ্যাপলের সমালোচনা করতে ছাড়েন না।
তার মন্তব্যের ব্যাপারে অবশ্য অ্যাপলের পক্ষ থেকেও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে।
তবে ওয়াল স্ট্রিটে অ্যাপলের শেয়ারের অবস্থা সুলির পক্ষেই কথা বলছে। গত সোমবার রোজেনব্ল্যাট সিকিউরিটিজ অ্যাপলের শেয়ারের দাম কমিয়েছে। পুঁজিবাজার বিশ্লেষক জুন ঝ্যাং বলছেন, স্বল্পমেয়াদের অ্যাপলের শেয়ারে তেমন প্রভাব তিনি দেখছেন না। তবে এ টেক জায়ান্ট আগামী ছয় থেকে ১২ মাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নিম্নমুখিতা দেখবে।
ঝ্যাং আরো বলেন, তিনি নতুন আইফোনের বিক্রি এত কম দেখে অবাক! অ্যাপলের অন্যান্য সেবা থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের হ্রাসমান প্রবণতা দেখছেন তিনি।