২০১৪ এর জুনে যাত্রা শুরুর পর বাংলাদেশের বাজারে পাঁচবছর পূর্ণ করলো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড অপো। যাত্রার শুরু থেকে দেশের স্মার্টফোন ক্রেতাদের হাতে যুগান্তকারী সব উদ্ভাবন তুলে দিয়েছে অপো। এক নজরে দেখে নেয়া যাক প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এই কোম্পানিটির গত পাঁচ বছরের উল্লেখযোগ্য সব উদ্ভাবনসমূহ।
বাংলাদেশে যাত্রার শুরুতেই অপো নিয়ে আসে তৎকালীন ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন ফাইন্ড ৭। প্রথমবারের মতো এই স্মার্টফোনে যুক্ত করা হয় ভোক প্রযুক্তির দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তি। এছাড়াও এই ফোনটিতে ছিলো ১৩ মিলিয়ন পিক্সেল থেকে ছবিকে ৫০ মিলিয়ন পিক্সেলের ছবিতে রূপান্তরের প্রযুক্তি। সেবছরই অপো নিয়ে আসে বিশ্বের প্রথম স্বয়ংক্রিয় ভাবে ঘুরতে সক্ষম সেলফি ক্যামেরা। এর মাধ্যমে পেছনের ক্যামেরাটি আপনা আপনি ঘুরে সামনে আসার প্রযুক্তি থাকায় প্রথমবারের মতো রীয়ার ক্যামেরাটিই সেলফি ক্যামেরা হিসেবে কাজ করতে সক্ষম।
২০১৫ তে অপো নিয়ে আসে পুরোপুরি ধাতব বডি’র অপো আর৭। এই ফোনটির সবচেয়ে দারুণ বিশেষত্ব ছিলো মাত্র ৫ মিনিট চার্জেই ২ ঘণ্টা কথা বলার মতো প্রযুক্তি। এবছর অপো ভোক ফ্ল্যাশ চার্জিং প্রযুক্তিকে নিয়ে যায় এক ভিন্নমাত্রায়। প্রথমবারের মতো বড় আঁকারের ব্যাটারিতে দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তি সংযোজন করা সম্ভবপর হয়। অপো আর৭ এ স্থাপন করা হয় ভোক ফ্ল্যাশ চার্জিং প্রযুক্তিযুক্ত ৩০৭০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি। বর্তমানে ১০ কোটিরও বেশি গ্রাহক এই ভোক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
২০১৬ তে প্রথমবারের মতো অপো নিয়ে আসে সেলফি এক্সপার্ট অপো এফ১ স্মার্টফোনটি। প্রথমবারের মতো রীয়ার ক্যামেরার চেয়ে শক্তিশালী ক্যামেরা স্থাপন করা হয় সেলফি ক্যামেরা হিসেবে। এতে থাকা ১৬ মেগাপিক্সলে সেলফি ক্যামেরা মুহুর্তেই সেলফিপ্রেমীদের মাঝে অর্জন করে নেয় বিপুল জনপ্রিয়তা।
এরপরের বছর অপো বাজারে নিয়ে আসে অপো এফ৫। ফোন আনলক করার ক্ষেত্রে এক নতুন চমক নিয়ে আসে এই স্মার্টফোনটি। আর্টফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির সহতায়তায় ফেস-আনলকিং প্রযুক্তি নিয়ে আসে অপো। এই ফোনটির মাধ্যমে সেলফি ছবিতে অপো নিয়ে আসে আমূল পরিবর্তন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় মুখমন্ডলের ২০০ এর অধিক স্থান বেঁছে নিয়ে প্রয়োজনীয় সম্পাদনা করে অপো এফ৫ এ থাকা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি। ফলে যেকোন আলোতে, যেকোন অবস্থাতেই মুখমন্ডলে আলো ও ফোকাসের মাঝে সমন্বয় সাধন করে দারুণ সব সেলফি ছবি আউটপুট দিতে সক্ষম হয় অপো এফ৫।
২০১৮ সালে দেশের বাজারে অপো নিয়ে আসে অপো এফ৭ এবং অপো এফ৯। ফোন দুটিতে থাকা ডায়মন্ড টেক্সচার এবং গ্র্যাডিয়েন্ট কালার ডিজাইন মুহুর্তেই গ্রাহক চাহিদার শীর্ষে তুলে আনে এ ফোনদুটিকে। অপো এফ৭ স্মার্টফোনে সেলফি ধারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি যুক্ত করায় নিখুঁত সেলফি ধারণে সক্ষম হয় এই স্মার্টফোনটি।
অপো’র ৫ বছর পূর্তির এই বছরটি নানা দিক থেকেই অপো’র জন্যে বিশেষ হয়ে থাকবে। ২০১৯ সালের শুরুতেই অপো নিয়ে আসে স্বল্প আলোতে ব্রিলিয়ান্ট পোর্ট্রেইট ধারনে সক্ষম ৪৮+৫ মেগাপিক্সেল ডুয়াল ক্যামেরা ও রাইজিং প্ল্যাটফর্মে স্থাপিত সেলফি ক্যামেরা যুক্ত অপো এফ১১ প্রো। এছররের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাজারে আসা এই ফোনটিতে রয়েছে এই মুহুর্তে বিশ্বের সর্বোচ্চ ৯৩.১ শতাংশ বডি-টু-স্ক্রিন রেশিওযুক্ত প্যানারমিক ডিসপ্লে। আড়াল থেকে আপনাআপনি উঠে আসা প্ল্যাটফর্মে স্থাপিত সেলফি ক্যামেরা এবং স্বল্প আলোতেও দারুণ পোর্ট্রেইট ধারণে সক্ষম ৪৮ মেগাপিক্সেল রীয়ার ক্যামেরা। বাজারে এর চমক থাকতে থাকতেই মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস ২০১৯ এ অপো ঘোষণা করে এর সদ্য উদ্ভাবিত ১০এক্স লসলেস জুম প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি ক্যামেরায় বহুদূরের সাবজেক্টকেও ক্যামেরার সম্মুখে নিয়ে আসে এর হাইব্রিড জুম প্রযুক্তি।
প্রথমবারের মতো এই ১০এক্স জুম প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয় অপো রেনো ১০এক্স জুম স্মার্টফোনে। জুনের শেষদিকে দেশের বাজারে অপো নিয়ে আসে এবছরের সবচেয়ে আলোচিত অপো রেনো ১০এক্স জুম স্মার্টফোন। সদ্য বাজারে আসা এই ফোনটিতে রয়েছে ১০এক্স লসলেস জুম প্রযুক্তি। সেলফি ক্যামেরা স্থাপনে এই ফোনটিতে সংযুক্ত করা হয় শার্কফিন রাইজিং প্ল্যাটফর্ম। এছাড়াও ফোনটিতে রয়েছে ভোক ৩.০ ফ্ল্যাশ চার্জিং প্রযুক্তি এবং ৯৩.১ শতাংশ বডি-টু-স্ক্রিন রেশিওর প্যানারমিক অ্যামোলেড ডিসপ্লে। ফলে স্মার্টফোনে কন্টেন্ট দেখার ক্ষেত্রে এক ভিন্নমাত্রায় পৌঁছে যায় অপো রেনো ১০এক্স জুম।
গত ৫ বছরের এই বৈপ্লবিক অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের স্মার্টফোন প্রেমীদের হাতে অপো পৌঁছে দিয়েছে যুগান্তকারী সব প্রযুক্তি। আসছে দিনগুলোতেও অপো তার উদ্ভাবনের মাধ্যমে যে বিশ্বকে চমকে দেবে এটি নিশ্চিত করেই ধারণা করা যায়।