আর্থিক সেবাদানকারী মার্কিন কোম্পানি ক্যাপিটাল ওয়ানের কাছ থেকে ১০ কোটি ৬০ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে এক হ্যাকার।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাপিটাল ওয়ান হ্যাকিংয়ের ওই ঘটনা জানতে পারে গত ১৯ জুলাই।
তবে সন্দেহভাজন সেই হ্যাকারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর সোমবার ক্যাপিটাল ওয়ানের পক্ষ থেকে তথ্য চুরির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়।
বিবিসি জানিয়েছে, ক্যাপিটাল ওয়ানের ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন এমন ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, জন্ম তারিখসহ আরও কিছু ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকারের হাতে পড়েছে।
তবে গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ডের অ্যাকাউন্ট নম্বর বেহাত হয়নি বলে দাবি করেছে ক্যাপিটাল ওয়ান।
যুক্তরাষ্ট্রে যেসব কোম্পানির ক্রেডিট কার্ড বেশি চলে তার মধ্যে ক্যাপিটাল ওয়ান একটি। পাশাপাশি তারা নিয়মিত ব্যাংকিং সেবাও দেয়।
সোমবার এক বিবৃতিতে ক্যাপিটাল ওয়ান বলেছে, যাদের তথ্য চুরি গেছে, তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১০ কোটি এবং কানাডার ৬০ লাখ মানুষ রয়েছেন।
তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত এক লাখ ৪০ হাজার মানুষের সোশাল সিকিউরিটি নম্বর এবং ৮০ হাজার মানুষের অন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বরও হ্যাকারের হাতে গেছে।
আর কানাডায় প্রায় দশ লাখ মানুষের সোশাল সিকিউরিটি নম্বরও বেহাত হয়েছে বলে স্বীকার করেছে ক্যাপিটাল ওয়ান।
তারা বলছে, কোম্পানির ডিজিটাল অবকাঠামোর একটি নিরাপত্তা ত্রুটি ব্যবহার করেই তথ্য চুরি করেছে হ্যাকার।
ক্যাপিটাল ওয়ানের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চুরি যাওয়া তথ্য কোনো ধরনের জালিয়াতিতে ব্যবহার হয়েছে বলে তারা মনে করছে না।
তবে এ ঘটনায় তাদের তদন্ত অব্যাহত থাকবে এবং যাদের তথ্য বেহাত হয়েছে, তাদের অ্যাকাউন্টের লেনদেনের ওপর নজর রাখার পাশাপাশি তথ্যের সুরক্ষায় বিনামূল্যে সেবা দেবে কোম্পানি।
ক্যাপিটাল ওয়ানের চেয়ারম্যান রিচার্ড ফেয়ারব্যাংক এক বিবৃতিতে বলেন, “অপরাধী ধরা পড়েছে, অন্তত এই কারণে আমি স্বস্ত্বি পাচ্ছি। যা ঘটেছে সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
“এ ঘটনায় যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সেজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী এবং এর সমাধানের বিষয়ে আমি অঙ্গীকারাবদ্ধ।”
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, এই হ্যাকিংয়ের ঘটনায় সিয়াটলের একটি প্রযুক্তি কোম্পানির একজন সাবেক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেপ্তার করে সোমবার ফেডারেল আদালতে হাজির করা হয়।
পেইজ টমসন নামের ৩৩ বছর বয়সী ওই নারীর বিরুদ্ধে কম্পিউটার জালিয়াতি এবং প্রযুক্তির অপব্যাবহারের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং আড়াই লাখ ডলার জরিমানা হতে পারে।
সিয়াটলের ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে দায়ের করা মামলার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, পেইজ টমসন তার চুরি করা কিছু তথ্য প্রোগ্রামিং প্ল্যাটফর্ম গিটহাবে পোস্ট করেছিলেন। গিটহাবের আরেক ব্যবহারকারী সেটা দেখে ক্যাপিটাল ওয়ানে খবর দেন।
এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গিটহাবের ওই পোস্ট ধরে তদন্ত চালিয়ে পেইজ টমসনকে গ্রেপ্তার করে। তবে ক্যাপিটাল ওয়ানের গ্রাহকদের তথ্য চুরির পেছনে তার আসল উদ্দেশ্য কি ছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়।