চীনভিত্তিক হুয়াওয়ে গত মে মাসে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে। একই সময় কালো তালিকাভুক্তও করা হয় প্রতিষ্ঠানটিকে।
চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম ও ডিভাইস নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব ২৩ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ৪০ হাজার কোটি চাইনিজ ইউয়ানে (৫ হাজার ৮৩০ কোটি ডলার) পৌঁছেছে। গত বুধবার প্রকাশিত হুয়াওয়ের অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
বিবৃতিতে হুয়াওয়ের চেয়ারম্যান লিয়াং হুয়া জানান, সুষ্ঠু ও দক্ষতার সঙ্গে ব্যবসায় কার্যক্রম পরিচালনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে হুয়াওয়ে। যে কারণে সব অর্থনৈতিক সূচকে ভালো করছে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছরের প্রথমার্ধে রাজস্বে উল্লম্ফন প্রতিষ্ঠানটির একনিষ্ঠতার প্রমাণ।
তিনি বলেন, এ সময় ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক পণ্য উৎপাদন ও আন্তর্জাতিক বিপণন, অপটিক্যাল ট্রান্সমিশন, ডাটা কমিউনিকেশনস, আইটি এবং অন্যান্য পণ্য থেকে হুয়াওয়ের ক্যারিয়ার ব্যবসা বিভাগের আয় হয়েছে ১৪ হাজার ৬৫০ কোটি চাইনিজ ইউয়ান। এরই মধ্যে ফাইভজি চালুর লক্ষ্যে ৫০টি বাণিজ্যিক চুক্তি সই এবং বিশ্ববাজারে দেড় লাখ ফাইভজি বেজ স্টেশন নির্মাণের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠিয়েছে হুয়াওয়ে।
জানুয়ারি-জুন সময়ে হুয়াওয়ের এন্টারপ্রাইজ ব্যবসায় বিভাগের আয় ৩ হাজার ১৬০ কোটি ইউয়ানে পৌঁছেছে। বর্তমানে ক্লাউড, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ক, ডাটা সেন্টার, ইন্টারনেট অব থিংস, ইন্টেলিজেন্ট কম্পিউটিংসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আইসিটি পোর্টফোলিওকে আরো উন্নত করতে জোর দিচ্ছে হুয়াওয়ে। পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে মার্কিন সরকার নানা অভিযোগ করলে হুয়াওয়ে বিভিন্ন দেশের সরকার ও ইউটিলিটি গ্রাহকের পাশাপাশি বিভিন্ন বাণিজ্যিক খাত যেমন ফিন্যান্স, যোগাযোগ ব্যবস্থা, এনার্জি ও অটোমোবাইল খাতের বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে।
চলতি বছরের প্রথমার্ধে হুয়াওয়ের কনজিউমার ব্যবসা বিভাগের আয় ২২ হাজার ৮০ কোটি ইউয়ানে পৌঁছেছে। এ সময় অনার ব্যান্ডসহ প্রতিষ্ঠানটির স্মার্টফোন সরবরাহ ১১ কোটি ৮০ লাখ ইউনিটে পৌঁছেছে, যা গত বছরের প্রথমার্ধের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি। একই সময় প্রতিষ্ঠানটির ট্যাবলেট ডিভাইস, পার্সোনাল কম্পিউটার (পিসি) এবং পরিধেয় প্রযুক্তিপণ্যের সরবরাহ ও বিক্রি বেড়েছে। গ্রাহক চাহিদার আলোকে পণ্য সরবরাহে ডিভাইস ইকোসিস্টেমকে আরো উন্নত করছে প্রতিষ্ঠানটি।
লিয়াং হুয়া জানান, এখন হুয়াওয়ের মোবাইল সার্ভিস ইকোসিস্টেমে আট লাখ নিবন্ধিত ডেভেলপার রয়েছেন। এছাড়া বিশ্বব্যাপী তাদের ৫০ কোটি গ্রাহক রয়েছেন।
তিনি বলেন, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লেও বছরের প্রথমার্ধে রাজস্ব বেড়েছে। অযৌক্তিক অজুহাতে ভবিষ্যতেও আমাদের প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালানো হতে পারে। তবে আমাদের এগিয়ে চলার পথে সাময়িক বাধার সৃষ্টি করলেও পিছিয়ে রাখা যাবে না। আমরা ভবিষ্যৎ যেকোনো পরিস্থিতি সামলে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছি।