বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডের একাদশ আসর অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গতকাল। বাংলাদেশের সেরা ব্র্যান্ডগুলোকে পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে সম্মাননা জানানো হয় এ অনুষ্ঠানে। দেশের ব্র্যান্ডিং শিল্পের সবচেয়ে বড় সম্মাননা এই বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড। প্রায় ৫শ’ আমন্ত্রিত অতিথির অংশগ্রহণে এবারের আসর অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর লা মেরিডিয়ান ঢাকায়। বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের উদ্যোগে ‘বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড ২০১৯’ নিয়েলসেন বাংলাদেশের অংশীদারিত্বে এবং ডেইলি স্টারের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত হয়।
দেশের ব্র্যান্ডগুলোকে অনুপ্রাণিত করতে, বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম গত ১১ বছর ধরে বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে সর্বাধিক প্রিয় ব্র্যান্ডকে সম্মানিত করে চলেছে। বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডের উদ্দেশ্য কঠোর প্রচেষ্টার মাধ্যমে অর্জিত ব্র্যান্ডগুলির সাফল্যের প্রদর্শন এবং উদযাপন। এ বছর ৩৪টি বিভাগে সেরা ব্র্যান্ড এবং সামগ্রিক শীর্ষ ১৫ ব্র্যান্ডকে বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডের বিশেষ ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এ আয়োজনের উদ্দ্যেশ্য হলো দেশে পরিচালিত ব্র্যান্ডগুলোর সফলতাকে সম্মাননার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করা। নিয়েলসেন- এর বিশ্বমানের জরিপ পদ্ধতি ‘উইনিং ব্র্যান্ডস’ অনুসারে দেশের সর্বাধিকপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলোকে সম্মাননা জানানো হয়। এ বছর জরিপের কার্যক্রমে বাংলাদেশের নিয়েলসেন দলকে পরামর্শগত সহায়তা করেছে নিয়েলসেন দক্ষিণ এশিয়া। দেশজুড়ে প্রায় ৪ হাজার ভোক্তার অংশগ্রহণে পরিচালিত এ জরিপের ওপর ভিত্তি করে এ বছর মোট ৩৪টি ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের পরিচালক, উইমেন ইন লিডারশিপের (ডাব্লুআইএল) সভাপতি এবং বাংলাদেশ ক্রিয়েটিভ ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা নাজিয়া আন্দালিব প্রিমা, যেখানে তিনি মনোনীত প্রার্থীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন ‘স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোকে আরও প্রখর হতে হলে তাদেরকে আমাদের সংস্কৃতির বিস্তারে গভীর অনুসন্ধান করতে হবে এবং উন্নত বাংলাদেশের মানসিকতা বোঝার মাধ্যমে শক্তিশালী ব্র্যান্ডগুলি বিজ্ঞান ও চারুকলার সাথে সম্পৃক্ত হতে হবে। তবেই ব্র্যান্ডগুলি টেকসই হবে কারণ এটি কার্যক্ষমতার সাথে সংবেদনশীলতার সেতুবন্ধন করে।’ আরও বক্তব্য রাখেন, প্রসুন বসু, প্রেসিডেন্ট, নিয়েলসেন সাউথ এশিয়া।
অনুষ্ঠানে বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডের জরিপ পদ্ধতি সম্পর্কে বক্তব্য প্রদান করেন নিয়েলসেন বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুদীপ চ্যাটার্জী।
১১তম বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডে ৩৪টি ক্যাটাগরিতে সর্বমোট ১শ’টি ব্র্যান্ডকে সম্মানিত করা হয়, এর মধ্যে প্রতিটি ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ ব্র্যান্ডগুলোর প্রতিনিধিদের হাতে সম্মাননা পদক তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও, পদক লাভ করেন সর্বশ্রেণীতে সেরা ১৫ ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিরা।
সেরা এ ১৫টি ব্র্যান্ডের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানলাভ করেছে যথাক্রমে বিকাশ, আরএফএল প্লাস্টিক এবং রাধুঁনী। এ বছর প্রায় সকল বিভাগে দেশীয় ব্র্যান্ডের আধিপত্য দেখা যায় এবং এই প্রথমবারের মত সেরা ১৫-এর তালিকায় প্রথম ৫টি ব্র্যান্ডের চারটিই দেশীয় ব্র্যান্ড।
বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডের এক দশক পূর্তি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম এ বছর ৫টি ব্র্যান্ডকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করে। এই ৫টি ব্র্যান্ড গত এক দশক ধরে সর্বশ্রেণীতে সেরা ১৫ তালিকাভুক্ত ছিল। ব্র্যান্ডগুলো হচ্ছে: প্যারাসুট অ্যাডভান্সড হেয়ার অয়েল, লাক্স, গ্রামীণফোন, সানসিল্ক ও ক্লোজআপ।
বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের উদ্দ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের রিসার্চ পার্টনার ছিল নিয়েলসেন বাংলাদেশ এবং সহযোগিতায় ছিল দ্য ডেইলি স্টার। এছাড়াও, নলেজ পার্টনার হিসেবে ছিল মার্কেটিং সোসাইটি অব বাংলাদেশ (এমএসবি), ইভেন্ট পার্টনার – লা মেরিডিয়ান ঢাকা; স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার – বাংলাদেশ ক্রিয়েটিভ ফোরাম; আইটি পার্টনার – আমরা নেটওয়ার্ক; লাইফস্টাইল পার্টনার – অ্যাডভান্সড টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস লিমিটেড, এবং পিআর পার্টনার – ব্যাকপেজ পিআর।
বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডের বিভাগ ভিত্তিক ফলাফল নিয়েলসেন বাংলাদেশের অফিস থেকে সাবস্ক্রাইব করা যাবে।