চীনে টানা কয়েক প্রান্তিক বিক্রি কমার পর গত ডিসেম্বরে আইফোন বিক্রি বেড়েছে, যা এক বছর আগের একই সময়ের চেয়ে ১৮ শতাংশ বেশি। গত বৃহস্পতিবার চায়না একাডেমি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজির তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়।
চীন স্মার্টফোনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাজার। ২০১৫ সালে দেশটিতে আইফোন বিক্রি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। এরপর থেকে স্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর উত্থানের কারণে ধারাবাহিকভাবে বাজার হারায় অ্যাপল এবং আইফোন বিক্রি সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছে। গত বছর গ্রাহক টানতে চীনের পাশাপাশি বিশ্বের কয়েকটি বাজারে আইফোনের দাম কমিয়েছিল অ্যাপল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বরে চীনে আইফোন বিক্রি বেড়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে চীনে ৩২ লাখ ইউনিট আইফোন সরবরাহে সক্ষম হয়েছিল অ্যাপল, যা এক বছর আগের একই সময়ের ২৭ লাখ ইউনিটের চেয়ে বেশি। উৎসব মৌসুম থাকায় ওই সময় দেশটিতে আইফোন বিক্রিতে ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়।
হুয়াওয়ে, অপো, শাওমি ও ভিভোর মতো চীনা ব্র্যান্ডগুলোর কারণে চীনে বাজার হারায় অ্যাপল। এছাড়া চড়া দামের কারণে চীনাদের মধ্যে আইফোন বিমুখতা বেড়ে যায়। অন্যদিকে স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো আইফোনের অর্ধেক দামে একই ফিচার ও সুযোগ-সুবিধাযুক্ত ডিভাইস সরবরাহ করায় বাজারটিতে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। গত বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে চীনে আইফোন নির্মাতা অ্যাপল খুব খারাপ সময় পার করে। তবে ডিসেম্বরে আইফোন বিক্রিতে প্রবৃদ্ধি প্রতিষ্ঠানটির ডিভাইস ব্যবসা বিভাগের জন্য ইতিবাচক হয়ে দেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধের জেরে হুয়াওয়ের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। যে কারণে হুয়াওয়ের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা পরিচালনা করা বন্ধ হয়ে পড়েছে। চীনে আইফোন বিক্রি কমার পেছনে এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপলের আইফোন বর্জন করে স্থানীয় হুয়াওয়ের ফোন ব্যবহার শুরু করে চীনারা। এখন চীনের স্মার্টফোন বাজারে শীর্ষে রয়েছে হুয়াওয়ে।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) তথ্যমতে, গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) চীনে যত সংখ্যক স্মার্টফোন সরবরাহ হয়েছে, তার ৪২ শতাংশই ছিল হুয়াওয়ের।
গত বছর জুড়েই চীনে আইফোন বিক্রি বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছিল অ্যাপল। এর মধ্যে রয়েছে আইফোনের দাম কমানো এবং কিস্তিতে কেনার সুবিধা চালু।
অ্যাপলের সর্বশেষ আর্থিক খতিয়ানে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুক বলেছিলেন, মূল্যছাড় ও কিস্তিতে আইফোন কেনার সুবিধা চীনা গ্রাহকদের আকর্ষণে কাজ করবে।