নকল বা ক্লোন হ্যান্ডসেট বাজারজাত বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। দেশে প্রায় তিন কোটি অবৈধ স্মার্টফোন রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। যা দেশে ব্যবহৃত মোট স্মার্ট ফোনের প্রায় ৩০ শতাংশ। এর ফলে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারায় সরকার। আগামী জুলাই নাগাদ চালু হতে যাচ্ছে মোবাইল ফোন সনাক্তকরণ পদ্ধতি। এরপর থেকে নকল ও ক্লোন আইএমইআই সংবলিত মুঠোফোন অপারেটরদের নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হলে পরবর্তীতে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রারের (এনইআইআর) মাধ্যমে তা নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করা হবে।
এদিকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) কিনতে যাচ্ছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এ জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনতে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দরপত্র প্রকাশ করেছে কমিশন।
কমিশনের প্রশাসন শাখার পরিচালক ইয়াকুব আলী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে দরপত্রের আবেদন করা যাবে। আবেদনকারীকে কমপেক্ষ সাত বছরের সাব-কন্ট্রাক্টার অভিজ্ঞতা অথবা পাঁচ বছরের সরবরাহকারীর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
মাত্র ১০ হাজার টাকা বা সমপরিমান ডলার জামানত দিয়ে এই আবেদন করা যাবে। ৩১ মার্চ টেন্ডার খোলা হবে। এরপর যেই প্রতিষ্ঠান কাজ পাবে তাদেরকে ১২০ দিনের মধ্যে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সিস্টেমটি চালু করতে হবে।
এনইআইআর পদ্ধতি চালু হলে অবৈধভাবে দেশে আনা মুঠোফোন মোবাইল অপারেটরদের নেটওয়ার্কে চালু করা যাবে না। বিটিআরসির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) জাকির হোসেন খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মুঠোফোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এ উদ্যোগ। এর মধ্যে আমরা অবৈধ মুঠোফোন ঠেকানোর ব্যবস্থাপনাকে একপর্যায়ে নিতে পারব আশা করি।’
বিটিআরসির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টি রেজিষ্টার বা এনইআইআর-এর মাধ্যমে নকল হ্যান্ডসেটগুলো নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করা হবে। আমদানি করা প্রতিটি হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর সার্ভারে সংরক্ষিত থাকবে। তাতে ক্রেতারা খুব সহজেই এসএমএস করে বা ডায়াল করে জেনে নিতে পারবেন সেটটি আসল না নকল। এজন্য, মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে KYD(স্পেস) ১৫ ডিজিটের আইএমইআই (IMEI) নম্বর লিখে ১৬০০২ নম্বরে পাঠাতে হবে। *#06# ডায়াল করে সেটের আইএমইআই নম্বর জানতে পারবেন।
নতুন ব্যবস্থা চালু হলে বিদেশ থেকে আসার সময় কিনে আনা, প্রবাসী স্বজনদের পাঠানো সেট ইত্যাদি ক্ষেত্রে কী হবে, জানতে চাইল জাকির হোসেন বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রে ব্যবস্থা থাকবে।’
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে ৯০টি ব্র্যান্ডের হ্যান্ডসেট আমদানির অনুমতি আছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০৮টি।