পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, ভালো শেয়ারের স্বল্পতাই পুঁজিবাজার চাঙ্গা করার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়। এই বাঁধা দূর না হওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যেমন আস্থার সংকট কাটবে না, তেমনি পুঁজিবাজারও ঘুরে দাড়ানোর সম্ভাবনা খুবই কম। আর তাই বাজারে ভালো শেয়ারের সরবরাহ বাড়াতে দেশীয় ও বহুজাতিক বড় কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করানোর প্রতি বিশেষ জোর দিয়েছেন তারা।
আর্থিক বিশ্লেষকরা জানান, ভালো ও বড় কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা দেয়ার বন্দোবস্ত করতে হবে। ভালো ইস্যুগুলোর ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি ও বেসরকারি স্টেকহোল্ডারদের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় এক দশক ধরে পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানি তেমন আসেনি। ফলে, বাজারে ভালো শেয়ারের অভাব তৈরি হয়েছে। তবে, বহুদিন পরে ওয়ালটনের মতো ভালো ও শক্তিশালী অ্যাসেট বেজড কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়া বিনিয়োগকারীসহ অন্যান্য স্টকহোল্ডারদের ব্যাপক আগ্রহী করে তুলেছে। তাদের বিশ্বাস- ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মতো ভালো ইস্যু পুঁজিবাজারের উন্নতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট কেটে স্বস্তি ফিরে আসবে। সেই সঙ্গে বাজারও কিছুটা চাঙ্গা হবে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজ বলেন, ওয়ালটন একটি ভালো কোম্পানি। তারা পুঁজিবাজারে লিস্টিং প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করে ওয়ালটন শেয়ার বাজারে আসলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করে নিতে সক্ষম হবে। ফলে বাজারও চাঙ্গা হবে তিনি আশাবাদী।
হাফিজ জানান, যে কোনো স্টক এক্সচেঞ্জে ভালো শেয়ার থাকা দরকার। অন্যথায় সেই শেয়ার বাজার কখনই উন্নতি করতে পারে না। আমাদের স্টক মার্কেটে ভালো শেয়ারের সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকটি। তাই, ওয়ালটনের মতো বড় ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর ইস্যু বাজারে আসা দরকার।
তিনি বলেন, “আমরা সবাই শুধু বলি- এসব কোম্পানি বাজারে আসা দরকার। কিন্তু, তাদেরকে আনার জন্য কোনো বন্দোবস্ত করি না। ওয়ালটনের মতো ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসলে তাদের শেয়ারের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সম্বনিত উদ্যোগ নিতে হবে।”
ভালো শেয়ার যদি পুঁজিবাজারে না আসে, পুঁজিবাজার তার লক্ষ্যে কখনোই পৌঁছতে পারবে না বলে জানান বিএমবিএ’র এই সাবেক সভাপতি ও ট্রিপল এ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের পরিচালক।
ইনভেস্টমন্টে করপোরেশন অব বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক মজিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ওয়ালটনের মতো ভালো কোম্পানির শেয়ার এলে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক হবে। পুঁজিবাজার ঘুরে দাড়াবে বলে ধারণা করছি।
ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শরিফ আনোয়ার হোসেন বলেন, ওয়ালটনের টার্নওভার বেশি। ইপিএস, পিই রেশিও বেশ ভালো। সার্বিকভাবে ওয়ালটন ভালো কোম্পানি। তারা পুঁজিবাজারে আসলে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন।