চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের রাজস্ব প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। আজ শুক্রবার হুয়াওয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারিতে ব্যবসা পরিচালনায় ব্যাপক চাপ ও যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের কারণে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ পেতে সমস্যার কারণে তাদের আয় কমেছে।
বিশ্বের টেলিকম যন্ত্রাংশের অন্যতম শীর্ষ সরবরাহকারী ও শীর্ষ স্মার্টফোন উৎপাদনকারী হুয়াওয়ে। তাদের দাবি, গত ৯ মাসে তাদের মোট ৬৭৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ইউয়ান (১০০ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত বছরের তুলনায় তা ৯ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। তবে গত বছরের প্রবৃদ্ধির যে হার ছিল তার তুলনায় ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ কম হয়েছে এবার। তাদের গড় মুনাফার হার ৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কমে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে।
ওয়াশিংটনের চোখে ১৯৮৭ সালে পিপল লিবারেশন আর্মির সাবেক প্রকৌশলী রেন ঝেংফি প্রতিষ্ঠিত হুয়াওয়ে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে মিত্রদের কাছে হুয়াওয়ের টেলিকম যন্ত্রপাতি কেনা ঠেকাতে লবিং করার পাশাপাশি হুয়াওয়ের কাছে সেমিকন্ডাক্টর বিক্রিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
বিশ্বে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ায় হুয়াওয়ের সাপ্লাই চেইন ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছিল। তাদের উৎপাদন প্রক্রিয়া ও পরিচালনায় ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল।
হুয়াওয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সমস্যা সমাধানে তারা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে টিকে থাকবে এবং সামনে এগিয়ে যাবে।
হুয়াওয়ের রাজস্ব কমার কারণ হিসেবে অবশ্য সরাসরি মার্কিন চাপের কথা উল্লেখ করা হয়নি বা স্মার্টফোন বিক্রি কমে যাওয়ার মতো বিভাগগুলোর পার্থক্য বের করা হয়নি। হুয়াওয়ে সাধারণত অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক আয় ঘোষণার সময় বিস্তারিত কারণ উল্লেখ করে থাকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার হুয়াওয়ের নতুন স্মার্টফোন ঘোষণার অনুষ্ঠানে হুয়াওয়ে কনজ্যুমার পণ্যের প্রধান নির্বাহী ইয়ু চেংডং বলেছেন, তাদের কোম্পানি ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে যা অন্যায্য।
ইয়ু বলেন, ‘এখন হুয়াওয়েকে খুব কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে।’
হুয়াওয়ের জন্য খারাপ খবরের পাহাড় জমছে। ওয়াশিংটন অভিযোগ করছে, বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। তারা হুয়াওয়ের যন্ত্রপাতিতে নিরাপত্তা ত্রুটি থাকার কথা বলছে, যাতে চীন চাইলে গোয়েন্দাগিরি করতে পারে। তবে এসব অভিযোগ চীন সরকার ও হুয়াওয়ে উড়িয়ে দিয়েছে। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র কোনো কথার প্রমাণ দিতে পারেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধের পাশাপাশি মিত্রদের ওপরও চাপ দিচ্ছে ওয়াশিংটন।
গত জুলাই মাসে যুক্তরাজ্য ৫-জি নেটওয়ার্কে হুয়াওয়ের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের বিষয়ে মোবাইল অপারেটরদের নিষেধ করেছে। ফ্রান্সের পক্ষ থেকেও হুয়াওয়ের গিয়ার ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সুইডেনও সম্প্রতি হুয়াওয়ে ও আরেকটি চীনা কোম্পানি জেডটিইকে তাদের দেশে ৫-জি নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ করেছে।