গত বছরজুড়ে স্যামসাংয়ের স্মার্টফোন বিক্রি কমেছে ১১ শতাংশ। তবে বছরজুড়ে স্মার্টফোন বিক্রি কমলেও গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা বেড়েছে ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ। খবর এনগ্যাজেটস।
আর্থিক প্রতিবেদনে জানানো হয়, কভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে গত বছরজুড়ে প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব এবং মুনাফা উভয়ই বেড়েছে। গত বছর প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আগের বছরের তুলনায় ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ২১ হাজার ১৫০ কোটি ডলার এবং মুনাফা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ২১০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের উল্লেখযোগ্য মুনাফা প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে মেমোরি চিপ এবং ডিসপ্লে ব্যবসা বিভাগ, যা তাদের প্রান্তিকভিত্তিক রাজস্ব উল্লম্ফনেরও প্রধান কারণ। বৈশ্বিক মহামারী ঠেকাতে ঘোষিত লকডাউনে কোটি কোটি মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়েছিল। গত বছরের শেষদিকে মহামারীর প্রকোপ কিছুটা কমতে শুরু করলে মানুষের মধ্যে মোবাইল ডিভাইসের প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে। বাসায় থেকে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা এবং অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা আবশ্যক হয়ে উঠলে মানুষ স্মার্টফোনের প্রতি ঝুঁকতে থাকে। যে কারণে মেমোরি চিপ ও ডিসপ্লের চাহিদা বেড়ে যায়।
বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের শীর্ষে রয়েছে স্যামসাং। ডিভাইস উৎপাদনের পাশাপাশি স্মার্টফোনের বিভিন্ন চিপ উৎপাদনে ক্রমে গুরুত্ব বাড়ছে প্রতিষ্ঠানটির। বর্তমানে মেমোরি চিপের পাশাপাশি মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপলের আইফোনের জন্য অন্যতম অর্গানিক লাইট-এমিটিং ডায়োড বা ওএলইডি ডিসপ্লে সরবরাহকারী স্যামসাং। গত বছর দ্বিতীয়ার্ধে ফাইভজি সমর্থিত আইফোন ১২ সিরিজের চার ডিভাইস উন্মোচন করেছে অ্যাপল। ডিভাইসগুলো বৈশ্বিক বাজারে ভালো সাড়া ফেলেছে। অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে অ্যাপলের রাজস্ব আয় ১১ হাজার ১৪০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। শুধু আইফোনের ওএলইডি ডিসপ্লে সরবরাহ করে গত বছর চতুর্থ প্রান্তিকে স্যামসাং ৫ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার রাজস্ব আয় করেছে।
গত বছরজুড়ে অন্য স্মার্টফোন নির্মাতাদের মতো স্যামসাংয়ের বিক্রিও হ্রাস পায়। কার্যত টানা কয়েক মাস বৈশ্বিক বাজার স্থবির হয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি হাই-এন্ড ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন গ্যালাক্সি এস২১ উন্মোচন করেছে স্যামসাং। বিশ্বের একাধিক বাজারে ডিভাইসটির বিক্রিও শুরু হয়েছে। এ ডিভাইসের সুবাদে আগামী প্রান্তিকে মোবাইল ডিভাইস বিভাগের রাজস্বে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর এপ্রিলে প্রতিদ্বন্দ্বী হুয়াওয়ের কাছে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের শীর্ষস্থান হারায় স্যামসাং। তবে গত আগস্টে তা পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয় প্রতিষ্ঠানটি। এখন বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের ২২ শতাংশ স্যামসাংয়ের দখলে রয়েছে, যা স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনামূলক বিচারে সর্বোচ্চ।
কভিড-১৯ মহামারী নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ঘোষিত লকডাউনে বিশ্বের বেশকিছু বাজারে নিষেধাজ্ঞাজনিত জটিলতার কারণে স্যামসাংয়ের ডিভাইস বিক্রি কমে বাজার হিস্যা ২০ শতাংশের নিচে নামে। তবে অনলাইনে ডিভাইস বিক্রির কার্যক্রম জোরদারের পর ভালো ফলাফল পেয়েছে স্যামসাং।