ঈদের ছুটির মধ্যেই পড়ে গেলো আমার বোনের জন্মদিন, যা আমরা ঘরোয়াভাবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিই। ঠিক হয় – এবারের আয়োজনে দেশীয় রান্নার পাশাপাশি থাকবে নানারকম কাবাব, কন্টিনেন্টাল ফ্রাই আইটেম, গ্রীল আর বারবিকিউ’র আয়োজন, কারণ পরিবারের সকলেই গ্রীল-বারবিকিউ ভীষণ পছন্দ করে। এর ধোঁয়া ওঠা মাংস আর সবজির কথা ভাবলেই সবারই জিভে জল আসে! তবে আয়োজনে একটু ভিন্নতা আনার জন্য এবার আমরা ঠিক করি, এবার সব করব বাসায় বসেই।
পাঠক নিশ্চয়ই ভাবছেন, তাহলে উপায় কী?
উপায় হল আমাদের রান্নাঘরের অন্যতম সঙ্গী – অল-ইন-ওয়ান কনভেকশন মাইক্রোওয়েভ ওভেন!
ঘরের ভেতর বসে মাংস ও সবজি নিখুঁতভাবে বারবিকিউ করা মোটেই সহজ নয়। তবে এই কনভেকশন মাইক্রোওয়েভ ওভেনের কুকিং ফাংশন এখন ঘরের ভেতরেই যেকোন সিজনে বারবিকিউ নাইট উদযাপন সম্ভব করে দিয়েছে।
এই ঘরোয়া বারবিকিউ’র আয়োজনের শুরুতে আমি আর আমার বোন প্রথমে রেফ্রিজারেটর থেকে মেরিনেট করা মাংস বের করে নিয়ে তা ওভেনে ডিফ্রস্ট করে নিই। এরই মধ্যে আমরা সাইড ডিশের সবজিগুলোও কেটে ফেলি। গল্পে গল্পে দু’জনেই যখন মশগুল, তখন ওভেনের বিপ বিপ শব্দ মনে করিয়ে দিল – মাংস এবার গ্রিল হওয়ার জন্য প্রস্তুত। মাংস গ্রিল করার জন্য ওভেনের কনভেকশন মোড চালু করলাম আমি। এই ওভেনের অন্যতম সেরা ফিচার হল এর হটব্লাস্ট টেকনোলোজি, যার মাধ্যমে অসংখ্য এয়ার হোলস থেকে উত্তপ্ত বাতাস সরাসরি খাবারের ওপরে প্রবাহিত হয়। ফলে মাংস ও সবজি বাইরে থেকে মুচমুচে হয়ে এলেও ভেতরে থাকে একদম নরম আর রসালো!
মেহমানদের সাথে গল্পগুজব করতে করতেই ওভেনের মাংস গ্রিল হয়ে গেল। এরপর আমি একটি পাত্রের ওপর কেটে রাখা সবজির ওপর সামান্য অলিভ ওয়েল ব্রাশ করি ও পরিমাণমতো লবন ছিটিয়ে দিই। পরে সবজির পাত্রটি স্লিমফ্রাই মোডে ওভেনের ভেতর দিই। এই মোডে সবজি এয়ার-ফ্রায়ারের তুলনায় দ্রুত রান্না হয়, আবার রান্নার পর তেল চিটচিটে ভাবও থাকে না। কনভেকশন মাইক্রোওয়েভ ওভেনের স্লিমফ্রাই মোড তাই এক অর্থে এয়ারফ্রায়ার কেনার টাকাও সাশ্রয় করে। এভাবে সুস্বাদু বারবিকিউ মাংস আর সবজি প্রস্তুত হয়ে এলে তা মেহমানদের সামনে পরিবেশন করি। বলাই বাহুল্য, মেহমানদের সকলেই এত অল্প সময়ে আর সহজে এমন চমৎকারভাবে রান্না করা বারবিকিউ খেয়ে অবাক হয়ে যান, আর তাদের সাথে কনভেকশন ওভেনের খুঁটিনাটি টিপস শেয়ার করে অনুষ্ঠানের হিরো বনে যাই আমরা!
অনেকেই হয়তো ভাবছেন – রান্না তো হল, কিন্তু এমন একটি আধুনিক অ্যাপ্লায়েন্স পরিষ্কার কিংবা রক্ষণাবেক্ষণের উপায় কী। পাঠক, কনভেকশন ওভেনের আরেকটি সেরা বিষয় হলো, এটি সিরামিক এনামেল ক্যাভিটি দিয়ে তৈরি করা হয়, ফলে রান্না শেষে লেগে থাকা যেকোনো তেল-মসলা-চর্বি মুছে ফেলতে কোনো ঝক্কিই হয় না! আর আমার কাছে স্যামসাং য়ের যে কনভেকশন ওভেনটি রয়েছে, তাতে রয়েছে ডিওডোরাইজেশন অপশন। ফলে মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে ওভেনের ভেতর থেকে পোড়া তেল-মসলার সব গন্ধ মিলিয়ে যায় একেবারেই!
রান্নাঘরের অ্যাপ্লায়েন্সের তালিকায় কনভেকশন মাইক্রোওয়েভ ওভেন যুক্ত করার সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে আমার নেয়া সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে একটি। অধিকাংশ ব্যবহারকারীরা সাধারণত খাবার গরম করার উদ্দেশ্যে ওভেন কিনে থাকেন। কিন্তু কনভেকশন সুবিধার ওভেনের মাধ্যমে আপনি বারবিকিউ, গ্রিল কিংবা স্লিমফ্রাই সহ সবধরণের রান্নার সুবিধা নিতে পারবেন। সামনে যদি কোনো প্রিয়জনের জন্মদিন বা অন্য কোনো বিশেষ দিন থেকে থাকে, তাহলে এবারের আয়োজনে নতুনত্বের ছোঁয়া লাগাতে আপনিও বসার ঘরেই রান্নার আসর জমিয়ে দিতে পারেন!