কথা হচ্ছে ফেসবুক মেসেঞ্জার নিয়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে কিংবা ঘুমাতে যাওয়ার আগে, দিনে অন্তত কয়েকবার মেসেঞ্জারে ঢুঁ মারার কথা আপনি না বললেও আমরা সবাই জানি। বন্ধুদের আড্ডা থেকে শুরু করে ক্লাস লেকচার যোগাড় করা- সব ব্যাপারেই মেসেঞ্জারের ব্যাপক ব্যবহার! চ্যাট করা, ছবি পাঠানো আর অডিও/ভিডিও কলের বাইরেও কিন্তু মেসেঞ্জারের বেশ মজার ও কাজের কিছু ফিচার রয়েছে। এই সুবিধাগুলো ব্যবহার করে আপনার জীবনকে আরেকটু সহজ করা সম্ভব। চলুন জেনে নিই ফেসবুক মেসেঞ্জারের দারুণ কিছু ফিচার যা অনেকেরই অজানা।
ফেসবুক একাউন্ট ছাড়াই ব্যবহার করুন মেসেঞ্জার
ফেসবুকের নীল-সাদা দুনিয়া আপনার পছন্দ না হওয়ার কারণে আপনার হয়তো কোনো কোনো সময় ফেসবুক একাউন্ট না রাখার দুর্লভ ইচ্ছে হতে পারে। কিন্তু প্রয়োজনের তাগিদে যদি আপনাকে মেসেঞ্জার ব্যবহার করতেই হয় তাহলেও কোন সমস্যা নেই। কারণ খুব সহজেই কোনো ফেসবুক একাউন্ট ছাড়াই শুধুমাত্র আপনার ফোন নম্বর দিয়ে লগইন করে মেসেঞ্জার ব্যবহার করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনার কন্টাক্ট লিস্টে থাকা অন্যান্য মেসেঞ্জার ব্যবহারকারীদের সাথে চ্যাট করতে পারবেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য আমার এই পোস্টটি পড়তে পারেন।
মেসেঞ্জার ওয়েব ভার্সন
ডেস্কটপে ফেসবুক ব্যবহার করার সময় এতে চ্যাটও করা যায়। কিন্তু আপনি যদি শুধুমাত্র চ্যাট করার জন্যই ফেসবুকের মেসেঞ্জার ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনি চাইলে মেসেঞ্জারের ওয়েব ভার্সন ব্যবহার করতে পারবেন। এজন্য মেসেঞ্জার ডট কম অথবা এড্রেস বারে এম ডট এমই লিখে এন্টার করলেই হলো। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য আমার এই পোস্টটি পড়তে পারেন।
মেসেঞ্জার ইনস্ট্যান্ট গেমস
ফেসবুক মেসেঞ্জার এখন শুধু একটি চ্যাটিং অ্যাপই নয় বরং এটি একটি সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্ম। মেসেঞ্জার থেকেই এখন আপনি সরাসরি ওয়েব অ্যাপ ভিত্তিক জনপ্রিয় সব গেইম খেলতে পারবেন। পাশাপাশি বন্ধুদেরকে চ্যালেঞ্জও করতে পারবেন। এ ব্যাপারে আরো জানার জন্য আমার এই পোস্টটি এবং এই পোস্টটি পড়তে পারেন।
মেসেঞ্জার চ্যাট বট
আপনি টেলিগ্রাম বা স্কাইপ ব্যবহারকারী হলে চ্যাট বট নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। চ্যাট বট মূলত অটোমেটেড প্রোগ্রাম যা আপনার সাথে চ্যাট করতে পারে। আর আপনি চ্যাট করেই এটাকে দিয়ে বিভিন্ন কাজ করাতে পারবেন। মেসেঞ্জারেও এই ফিচার আছে। বিভিন্ন জনপ্রিয় থার্ড পার্টি বট এখন মেসেঞ্জার থেকেই ব্যবহার করতে পারবেন। আরও জানতে পারেন এখানে। (যদিও ‘এম’ বন্ধ হয়ে গেছে, তবে মেসেঞ্জারের বট সাপোর্ট অন্য অনেক কোম্পানিই ব্যবহার করছে। যেমন বিভিন্ন টেলিকম ব্র্যান্ড এবং ব্যাংকের ফেসবুক পেজে আপনি বট/অটো রিপ্লাই পাবেন।)
মেসেঞ্জার রিমাইন্ডার
ধরুন, আপনার আগামী তিন দিন পর একটি প্রজেক্ট কাউকে সাবমিট করতে হবে। আপনি যদি ভুলোমনা হয়ে থাকেন তাহলে আপনার উচিৎ হবে মেসেঞ্জারে তার চ্যাট থ্রেডে গিয়ে উপরের দিকে ডান পাশের ‘i’ বাটনে ক্লিক করে অপশনে গিয়ে একটা প্ল্যান ক্রিয়েট করা (স্টার্ট এ প্ল্যান)। মেসেঞ্জার নিজেই আপনাকে বিষয়টি যথাসময়ে নোটিফিকেশন এর মাধ্যমে মনে করিয়ে দিবে। আপনি চাইলে পুরো একটি গ্রুপের জন্যও প্ল্যান ক্রিয়েট করতে পারবেন।
নিক নেইম সেট করা
মনে করুন, আপনারা ৩০ জন একটি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করার জন্য মেসেঞ্জারে গ্রুপ চ্যাট খুললেন। সবাই চ্যাট করার সময় অচেনা/একই নামের অন্য কেউ থাকলে বিভ্রান্তি হতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে সবার নিকনেইম হিসেবে তাদের ডাকনাম ও সাথে পদবি দিয়ে দিতে পারেন। তাহলে আর বিভ্রান্তি থাকবে না। অবশ্য এই ফিচারটা বন্ধুদের মাঝে মজা করার উদ্দেশ্যেও ব্যবহার করা হয়।
মেসেঞ্জারে লোকেশন শেয়ার
ধরা যাক, আপনি প্রথমবারের মত আপনার বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছেন। আপনার বন্ধুও সাথে নেই। সেক্ষেত্রে আপনি কোথায় আছেন কিংবা কোনদিক দিয়ে যাচ্ছেন তা সরাসরি আপনার বন্ধুর সাথে শেয়ার করতে পারবেন এই ফিচারের মাধ্যমে। আপনার বন্ধু আপনাকে একবারে একটানা ১ ঘন্টার জন্য আপনার প্রতিটি পদক্ষেপ ট্র্যাক করতে পারবেন। এ সুবিধাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমার এই পোস্টটি পড়ুন।
নিজেই নিজেকে মেসেজ পাঠান
ফেসবুক মেসেঞ্জারে আপনি চাইলে নিজেকেই নিজে মেসেজ পাঠাতে পারেন। মেসেঞ্জারের সার্চ বারে গিয়ে নিজের ফেসবুক আইডির নাম লিখলেই আপনার প্রোফাইল দেখতে পাবেন। ওখানে ক্লিক করে আপনাকে আপনি মেসেজ, ছবি, ভিডিও সব পাঠাতে পারবেন। আপনি হয়তো ভাববেন কী দরকার নিজেকে নিজে মেসেজ পাঠানোর! আসলে নিজেকে নিজে মেসেজ পাঠানোর মাধ্যমে আপনি গুরুত্বপুর্ণ নোট, ছবি কিংবা ফাইল মেসেঞ্জারে সংরক্ষণ করে রাখতে পারছেন। চাইলে পরে যে কোনো ডিভাইস থেকেই সেগুলো আবার এক্সেস করতে পারবেন। এটা অনেকটা নোটপ্যাড, বুকমার্ক ম্যানেজার আর একই সাথে ক্লাউড ড্রাইভ হিসেবে কাজ করবে। তবে একান্ত না ঠেকলে এই ফিচারটি বেশি ব্যবহার না করাই ভাল। কে জানে, কখন আবার ফেসবুক মাইন্ড করে বসে!