কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নানা উদ্যোগ ও অবদানের মাধ্যমে চিকিৎসক, গ্রাহক এবং ক্ষতিগ্রস্ত খুচরা ব্যবসায়ী পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে গ্রামীণফোন। পূর্ববর্তী নানা কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা হিসাবে নতুন এসব উদ্যোগগুলো নেয়া হয়েছে। কভিড-১৯ মোকাবেলায় আজ পর্যন্ত গ্রামীণফোনের সকল প্রতিশ্রুত উদ্যোগের পরিমান দাঁড়িয়েছে ১০০ কোটি টাকা।
গ্রামীনফোন শুরু থেকেই কভিড-১৯ এর পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যালোচনা করে আসছে এবং সে অনুযায়ী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানা উদ্যোগের মাধ্যমে করোনা মোকাবেলায় অবদান রাখছে।
এসব উদ্যোগের ঘোষণাকালে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, ‘দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে আমাদের আগে কখনও এমন সংকটপূর্ণ অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়নি। এমন একটি সঙ্কট আসবে এবং সেটি এভাবে আমাদের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, সেটা কেউই চিন্তা করতে পারেনি। তাই এখন সময় সবাই এক সাথে এর মোকাবেলা করা।ধৈর্য, বোঝাপড়া, সহানুভূতি নিয়ে আমাদের একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। এটা আমাদের সবার জন্য একটি পরীক্ষা এবং আমার বিশ্বাস, একতাবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে এ চলমান সঙ্কট মোকাবিলা করা সম্ভব। কভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারি নানা কর্তৃপক্ষ, উন্নয়ন সংস্থাসহ সামগ্রিকভাবে শিল্পখাতের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাকে সত্যিকারভাবে উৎসাহিত করেছে।’
গ্রামীণফোন বিশ্বাস করে সরকার ও বিভিন্ন উন্নয়নসহযোগিদের যৌথ কার্যক্রমের মাধ্যমে এই সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব।
ইয়াসির আজমান আরও বলেন, ‘কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারকে সহায়তায় অনুকরণীয় সব উদ্যোগ গ্রহণে গ্রামীণফোন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, এটুআই, ব্র্যাক, বিটিআরসি, ডব্লিউএইচও, ইউনিসেফ, ইউএনডিপি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং শিল্পখাতের অন্যান্য অংশীদারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে”।
করোনা মোকাবেলায় সম্মুখসারির যোদ্ধাদের ধারাবাহিক সহায়তার অংশ হিসাবে এ পর্যায়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্বীকৃত ২৫,০০০ চিকিৎসকদের সহযোগিতা কার্যক্রম আরও প্রসারিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রামীণফোন। এ কার্যক্রমের আওতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্বীকৃত চিকিৎসকদের ১ টাকা টোকেন মূল্যের বিনিময়ে প্রতিমাসে ৩০ জিবি ইন্টারনেট দেয়ার ঘোষনা দিয়েছে গ্রামীণফোন। এই সুবিধা নির্ধারিত চিকিৎসকদের আগামী ছয় মাস চলমান থাকবে।
এছাড়াও, এপ্রিল মাসে রিচার্জ করতে পারেননি বা যাদের ব্যালেন্স নেই বললেই চলে এমন শনাক্তকৃত এমন গ্রাহকদের ১০ কোটি মিনিটি ফ্রি টক টাইম (গ্রাহক প্রতি ১০ মিনিট) দেয়া শুরু করেছে গ্রামীণফোন। প্রতিষ্ঠানটির এ উদ্যোগ মূল্যবান গ্রাহকদের তাদের প্রিয়জনদের সাথে যোগাযোগে সহায়তা করবে।
এছাড়াও, জরুরি সেবাদাতা হিসেবে গ্রামীণফোন এ সঙ্কটকালীন সময়ে এর সাড়ে ৭ কোটি গ্রাহকের জন্য সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রতি মিনিট কলরেট ৪৮ পয়সা করেছে।
লকডাউন পরিস্থিতিতে ডেটার ব্যবহার বৃদ্ধি মূল্যায়ন করেছে গ্রামীণফোন। যেহেতু দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম, ব্যবসা -বানিজ্য এ জরুরি সেবা চলছে ইন্টারনেট উপর ভিত্তি করে তাই মাইজিপি অ্যাপ থেকে কেনা সকল সাপ্তাহিক ডাটা প্যাকে ১০০ শতাংশ বোনাস ঘোষণা করেছে গ্রামীণফোন।
এ প্রতিকূল সময়ে গ্রাহক সেবাদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন গ্রামীণফোনের খুচরা ব্যবসায়িরা। তাদের কথা চিন্তা করে, এ সঙ্কটের সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত খুচরা ব্যবসায়ীদের সহায়তায় গ্রামীণফোন ১০ কোটি টাকা সমমানের সেফটি-নেট ক্রেডিট স্কিমের ঘোষণা দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোনের প্রধান বিপনন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হাসিব, প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা খায়রুল বাসার অংশ নেন। এসব উদ্যোগের পাশাপাশি, দেশের অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তায় গ্রামীণফোন ব্র্যাকের সাথে এর যৌথ প্রচেষ্টা ‘ডাকছে আমার দেশ’ উদ্যোগের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। এ কার্যক্রমে গ্রামীণফোন ইতিমধ্যে ১ লাখ পরিবারকে ১৫ কোটি টাকার খাদ্য সহায়তা দিয়েছে গ্রামীণফোন। এছাড়া করোনা মোকাবেলায় চিকিৎসক ও সাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্ধারিত হাসপাতালে ৫০ হাজার প্রফেশনার পিপিই দিয়েছে গ্রামীণফোন।