রবির বর্তমানে সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ৩০ লাখ, যা দেশের মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ। এই গ্রাহককে সেবা দিয়ে ৮৬ দশমিক ৫ কোটি টাকা কর পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) নিয়ে বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষ করেছে রবি ।
প্রতিষ্ঠানটির দাবি ২ শতাংশ ন্যূনতম টার্নওভার কর না থাকলে, এর পরিমাণ হতো ১২৮ দশমিক ২ কোটি টাকা। ফোরজিতে আধিপত্য, গত প্রান্তিক থেকে এ প্রান্তিকে কর পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) বৃদ্ধির হার ৮৫ দশমিক ৪ শতাংশ; ইন্ডাস্ট্রিতে সর্বোচ্চ ৭৪ শতাংশ ডাটা ব্যবহারকারী
তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির পিএটি চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় ৮৫ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ২০২০ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় ১২২ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে । গত বছরের প্রথম নয় মাসের তুলনায় এ বছরের প্রথম নয় মাসে রবি’র পিএটি বেড়েছে ৪৪ দশমিক ৩ শতাংশ ।
স্থিতিশীল ঊর্ধ্বগামী রাজস্ব এবং দক্ষ ব্যয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বছরের প্রথম নয় মাসে অপারেটরটির পিএটি পৌঁছেছে ১৬৭ দশমিক ৪ কোটি টাকায় । আজ রবিবার (৩১ অক্টোবর, ২০২১) এক ডিজিটাল সাংবাদিক সম্মেলনে এ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের ফলাফল ঘোষণার সময় এসব তথ্য জানিয়েছে অপারেটরটি।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় রবি’র ফোরজি গ্রাহক সংখ্যা তৃতীয় প্রান্তিকে বৃদ্ধি পেয়েছে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে ২০২০ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় রবি’র ফোরজি গ্রাহক সংখ্যা ৫১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। মোট ৫ কোটি ৩০ লাখ গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২৪ লাখ গ্রাহক ফোরজি সেবার আওতায় এসেছে। এছাড়া অপারেটরটির ৭৪ শতাংশ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করেন যা এ খাতে সর্বোচ্চ।
২০২০ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় এ প্রান্তিকে রবি’র গ্রাহক সংখ্যা ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় তৃতীয় প্রান্তিকে রবি’র গ্রাহক সংখ্যা ২ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে রবি’র মোট গ্রাহক দেশের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ।
চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে রবি’র রাজস্ব আয় ২ হাজার ৮৫ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এটি দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি । আর গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর) রবি’র রাজস্ব দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৭ কোটি টাকা।
গত প্রান্তিকের তুলনায় ০ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের শেষ নাগাদ রবি’র ইবিআইটিডিএ দাঁড়িয়েছে ৮৬১ দশমিক ২ কোটি টাকা । তবে ২০২০ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় ইবিআইটিডিএ ৯ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি প্রান্তিক শেষে ইবিআইটিডিএ মার্জিন দাঁড়িয়েছে ৪১ দশমিক ৩ শতাংশে।
তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ০.১৭ টাকা যা চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ছিল ০.০৯ টাকা এবং গত বছরের একই প্রান্তিকে ইপিএস ছিল ০.০৮ টাকা । তবে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসের জন্য (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর, ২০২১) ইপিএস ছিল ০.৩২ টাকা।
চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ৬৫০ দশমিক ৭ কোটি টাকা মূলধন বিনিয়োগ করার মাধ্যমে বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) রবি’র মোট মূলধন বিনিয়োগ ১ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ১ হাজার ১১৯ কোটি টাকা যা এই প্রান্তিকের মোট রাজস্বের ৫৩ দশমিক ৭ শতাংশ ।
বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ৩ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা, যা এই সময়ে কোম্পানির মোট রাজস্বের ৫৫ দশমিক ৬ শতাংশ । চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে রবি’র ১৪ হাজার ৪৬৬টি সাইট ছিল।
কোম্পানির আর্থিক ফলাফল সম্পর্কে রবি’র অ্যাক্টিং সিইও অ্যান্ড সিএফও, এম রিয়াজ রশীদ বলেন,“ এই বছরের প্রতি প্রান্তিকেই আমাদের মুনাফা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত । তবে, এটা খুবই হতাশাজনক যে প্রথম নয় মাসে আমাদের কর পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) ১৬৭ দশমিক ৪ কোটি টাকার পরিবর্তে ২৮৯ দশমিক ৩ কোটি টাকা হতে পারত, যদি ২ শতাংশ ন্যূনতম টার্নওভার কর আমাদের উপর আরোপ করা না হতো। যার ফলে আমাদের শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানিতে তাদের বিনিয়োগের প্রাপ্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”
ডিজিটাল ফ্রন্টে, রবি’র ইন্ডাস্ট্রিতে সর্বোচ্চ ৭৪ শতাংশ ডাটা ব্যবহারকারী থাকার বিষয়ে রিয়াজ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন । তিনি আরও উল্লেখ করেন ৪২ শতাংশ রবি স্মার্টফোন এবং ডাটা ব্যবহারকারী গ্রাহকরা কোম্পানির সেলফ-কেয়ার অ্যাপ ব্যবহার করে সক্রিয়ভাবে তাদের পছন্দসই বিভিন্ন সেবা উপভোগ করছেন। এছাড়াও, গত বছরের তুলনায় ডিজিটাল কাস্টমার টাচপয়েন্টে গ্রাহকের যোগাযোগ ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর দ্বারা এটি স্পষ্ট যে রবি তার ডিজিটাল লক্ষ্যমাত্রার দিকে সুন্দরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
এসএমপি বিধিমালাগুলোর অকার্যকর প্রয়োগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অবিলম্বে এসএমপি বিধিমালাগুলোর বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে, এই ইন্ডাস্ট্রির দ্রুত বিকাশমান প্রকৃতির কারণে এসএমপি বিধিমালাগুলোর কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। এই অবস্থায়, ভবিষ্যতে মার্কেটে চার অপারেটর কতক্ষণ টিকে থাকতে পারবে তা একটি উদ্বেগের বিষয় ।