স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পে ফ্লোরা টেলিকম লিমিটেডের মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন ৫০ জন আইটি সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার। নিয়োগের শুরুর দিকে কোনোমতে তিন মাসের বেতন পেলেও এরপর গত আট মাস ধরে ৪৮ জন কর্মী বেতন পাচ্ছেন না। এর মধ্যে আবার ছাঁটাইয়ের হুমকিতে রয়েছেন তাঁরা।
২০২৪ সালের মে ও জুন মাসে দুই ধাপে দেশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁদের কাজ ছিল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সফটওয়্যারের মাধ্যমে রোগীসংক্রান্ত তথ্য, রাজস্ব আয়, ল্যাবরেটরি রিপোর্ট ইত্যাদি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো। চাকরির শুরুর সময় বলা হয়েছিল, কমপক্ষে তিন বছরের কাজের নিশ্চয়তা থাকবে। কিন্তু এক বছরেরও কম সময়েই তাঁরা পড়েছেন অনিশ্চয়তায়।
‘প্রথমে তিন মাসের বেতন কোনোমতে পেয়েছিলাম। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠান ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সময় দিচ্ছে। এখন আবার বলছে—চাকরি খুঁজে নিতে। অথচ আমাদের বলা হয়েছিল, তিন বছর কাজের নিশ্চয়তা থাকবে,’ বলছিলেন মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ফয়সাল আহমদ।
বেতন না পাওয়ায় গত ২০ এপ্রিল রাজধানীর বনানীতে ফ্লোরা টেলিকমের কার্যালয়ের সামনে কর্মীরা অবস্থান নেন। প্রতিষ্ঠানটি তখন জানায়, আগামী রোববার (২৭ এপ্রিল) তাঁদের বেতন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
তবে ফ্লোরা টেলিকমের চিফ অপারেটিং অফিসার এস জাওয়াহের আহমেদ বলেন, ‘প্রকল্পভিত্তিক কাজ হওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অর্থ ছাড় না করায় আমরা বেতন দিতে পারিনি। তারপরও কর্মীরা আন্দোলন শুরু করলে আমরা আশ্বাস দিয়েছি, নির্ধারিত তারিখে তাদের জানানো হবে।’
তবে তিন বছরের চাকরির প্রতিশ্রুতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই নিয়োগ স্থায়ী ছিল না। চুক্তিভিত্তিক হওয়ায় চাকরির মেয়াদ বা নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি।’
চাকরি হারানো ও বকেয়া বেতন না পাওয়ার দুশ্চিন্তায় এখন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন এসব আইটি ইঞ্জিনিয়ার। এক কর্মী বলেন, ‘১৮ হাজার টাকার চাকরি করে পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। এখন ৮ মাসের বেতন আটকে আছে। কেউ দায়িত্ব নিচ্ছে না।’