ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রান্তিক কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্য, ক্রয় এবং বিক্রয়ের জন্য পরিপূর্ণ আঙ্গিকে ডাক বিভাগকে প্রস্তুত করা হচ্ছে।প্রান্তিক কৃষককে তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে বিক্রয়লব্ধ টাকা কোন মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়াই সংশ্লিষ্ট কৃষকের হাতে পৌঁছে যাবে। দেশব্যাপী ডাক পরিবহনে নিয়োজিত ঢাকা ফেরৎ গাড়ী সমূহে বিনা মাশুলে প্রান্তিক কৃষকের পণ্য পরিবহনে সরকারের বাড়তি কোন খরচেরও প্রয়োজন হবে না। কৃষক সমাজের কাছে জাতির ঋণ পরিশোক করার জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ডাক অধিদপ্তর বিনা মাশুলে ঢাকায় আম পরিবহন কর্মসূচির উদ্বোধন উপলক্ষে স্থানীয় জেলা প্রশাসন আয়োজিত বিনা মাশুলে আম পরিবহন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। তিনি ঢাকায় তাঁর দপ্তর থেকে জুম ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ।
মন্ত্রী দেশব্যাপী ডাকঘরের বিস্তৃর্ণ পরিবহণ নেটওয়ার্ক ও বিশাল অবকাঠামো দেশের প্রান্তিক কৃষকের কল্যাণে কাজে লাগাতে ডাক বিভাগের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির অভাবনীয় বিকাশের ফলে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান ডাক বিভাগ বিলীন হয়ে গেছে এটাই ধারণা ছিল। প্রধানমন্ত্রী ডাকঘর প্রতিষ্ঠানটি খুবই মমতার সাথে দেখছেন উল্লেখ করে জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, করোনার শুরু থেকেই কৃষির প্রতি প্রধানমন্ত্রী বিশেষ গুরুত্বারোপ করে আসছেন। সেই লক্ষ্যেই কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। করোনার লকডাউনের সময় জাতীয় দায়িত্বের অংশ হিসেবে কৃষির প্রতি আমাদের গুরুত্ব দেয়ার সেই আবশ্যকতা বিবেচনায় মানিকগঞ্জ জেলার ঝিটকা বাজার, খাগড়াছড়ি এবং রাজশাহী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে কৃষকের পণ্য পরিবহনের যাত্রা আমরা শুরু করেছি।এটা সাময়িক। আমরা এটা একটি স্থায়ী ব্যবস্থায় রূপ দিতে যাচ্ছি। লকডাউনের সময় জাতীয় দায়িত্বের অংশ হিসেবে ডাক অধিদপ্তর খুলে দিয়ে সঞ্চয় ও পেনশনভোগী মানুষদের লেনদেন চালু রাখার সুযোগ দিয়েছি। লাখ লাখ মানুষ এতে উপকৃত হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা লেন- দেন হয়েছে। সরকার ডাক অধিদপ্তরকে জরুরী সেবার আওতাভুক্ত করে সেবার জন্য মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে।
চাঁপাইগঞ্জ জেলা প্রশাসক এ জেড এম নুরুল হক এর তসভাপতিত্বে জুম ভিডিওতে সংযুক্ত থেকে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো.নূর-উর-রহমান, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএস ভদ্র, রাজশাহীর পোস্টমাস্টার জেনারেল মো: শফিকুল আলম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কৃষি সম্প্রসারণ উপ-পরিচালক নজরুল ইসলাম, স্থানীয় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো: রুহুল আমিন,রাজশাহী অঞ্চলের ডিপিএমজি ওয়াহিদ-উজ-জামান আম কৃষক মঞ্জুরুল আলম প্রমূখ অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
করোনা সংকটকালে জনগণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সেবাসমূহ সহজতর করতে সরকার গত ৯ মে থেকে কৃষকবন্ধু ডাক সেবা চালু করেছে। এছাড়াও বিনা মাশুলে করোনা চিকিৎসা উপকরণ পিপিই ও কীট দেশব্যাপী সিভিল সার্জন কার্যালয়সমূহে পৌঁছানোসহ জনগণের দোরগোড়ায় নিরবচ্ছিন্ন ডাক সেবা নিশ্চিত করতে ভ্রাম্যমান ডাক সেবা চালু করা হয় বলে মন্ত্রী ভিডিও বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।