সূর্যের কেন্দ্রের তাপমাত্রা প্রায় দেড় কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি পারমাণবিক চুল্লি সূর্যের কেন্দ্রের চেয়ে ছয় গুণের বেশি তাপমাত্রায় পৌঁছাতে পারে। এ কারণেই এই চুল্লিকে বলা হয় দক্ষিণ কোরিয়ার ‘কৃত্রিম সূর্য’। এই চুল্লি এবার নতুন রেকর্ড গড়েছে। এটি ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় শুধু পৌঁছায়ইনি, এই তাপমাত্রা ২০ সেকেন্ডের বেশি সময় ধরে রাখতে পেরেছে। এর আগে বিশ্বের আর কোনো চুল্লি এমন তাপমাত্রা এত লম্বা সময় ধরে রাখতে পারেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তথ্যমতে, সূর্যের একেক জায়গায় তাপমাত্রা একেক রকম। এর কেন্দ্রের তাপমাত্রা প্রায় দেড় কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে সূর্যপৃষ্ঠের তাপমাত্রা মাত্র ৫ হাজার ৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পৃথিবী থেকে সূর্যের এই পৃষ্ঠটিই দেখা যায়। অবশ্য এই নক্ষত্রের পরিমণ্ডলের সবচেয়ে বাইরের প্রান্তে আবার তাপমাত্রা বেড়ে কোটি ছাড়িয়ে যায়।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক চুল্লিগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে লাগে। এই চুল্লিগুলোর একটি কোরিয়া সুপারকন্ডাক্টিং টকামাক অ্যাডভান্সড রিসার্চ (কেএসটিএআর বা কেস্টার)। একেই বলা হচ্ছে দেশটির কৃত্রিম সূর্য। এই চুল্লিতে উত্তাপে আয়ন ও পরমাণুর ইলেকট্রন বিচ্ছিন্ন হয়। আর এর মাধ্যমে যে শক্তি পাওয়া যায়, তা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
কেস্টার চুল্লিটি এর আগে ২০১৮ সালে ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে সেই তাপমাত্রা ৮ সেকেন্ড ধরে রাখতে পেরেছিল। এরপর অবশ্য বিভিন্ন দেশের কয়েকটি চুল্লি সেই রেকর্ড ভেঙে ১০ সেকেন্ড পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিল। কিন্তু এবার কেস্টার যে রেকর্ড গড়ল, তা এর আগে কোনো চুল্লিই করতে পারেনি। পরপর দুবার ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পেরেছে কেস্টার। এই অর্জনকে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছেন কেস্টার রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক সি–উ উন।
তবে উচ্চ তাপমাত্রায় পৌঁছানোর ক্ষেত্রে চীনের এইচএল–টুএম টকামাক চুল্লি সবার আগে রয়েছে। এই চুল্লিটি গত ডিসেম্বরে ১৫ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পেরেছিল।