মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল এবার ভারতে একটি মামলার সম্মুখীন হয়েছে। এই অ্যান্টিট্রাস্ট অভিযোগ করা হয়েছে, ডেভেলপারদেরকে ‘ইন-অ্যাপ পারচেস’ প্রক্রিয়া ব্যবহারে বাধ্য করে নিজেদের বাজার আধিপত্য বিস্তার করার সুযোগ নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, ভারতের অ্যান্টিট্রাস্ট মামলার অভিযোগের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দায়ের করা অভিযোগের মিল রয়েছে। ডেভেলপারদের কাছ থেকে অ্যাপলের ৩০ শতাংশ ইন-অ্যাপ ফি নেওয়া ও অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে নিয়ে গত বছর তদন্ত শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ভারতে অ্যাপলের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছে স্বল্প পরিচিত অলাভজনক সংস্থা ‘টুগেদার উই ফাইট সোসাইটি’। তাদের ভাষ্যে, অ্যাপ ডেভেলপার ও ক্রেতাদের খরচ বৃদ্ধি করে প্রতিযোগিতাকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে অ্যাপলের ওই ৩০ শতাংশ ফি। পাশাপাশি এটি বাজারে প্রবেশের প্রতিবন্ধকতা হিসেবেও কাজ করছে।
“৩০ শতাংশ কমিশনের অস্তিত্ব থাকার মানে দাঁড়াচ্ছে কিছু অ্যাপ ডেভেলপার কখনও বাজারে পৌঁছাতে পারবেন না… এটি ভোক্তার ক্ষতি হয়েও দাঁড়াতে পারে।” – উল্লেখ রয়েছে মামলার নথিতে।
ভারতীয় আদালত মামলা, নথি এবং পর্যালোচিত মামলার বিস্তারিত জানালেও, ‘কম্পিটিশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া’ (সিসিআই) এরকমটি করে না বলেই উঠে এসেছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।
মামলা প্রসঙ্গে অ্যাপল বা সিসিআই কোনো মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছেন, আসন্ন সপ্তাহগুলোতে সিসিআই মামলাটি পর্যালোচনা করে দেখবে এবং প্রয়োজনে নিজেদের তদন্ত বিভাগকে বড় মাপে তদন্ত করে দেখতে বলবে। আবার অভিযোগের কোনো ভিত্তি না পেলে গোটা মামলাটিই খারিজ করে দিতে পারে তারা।
“তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ ইইউ-ও এটি নিয়ে তদন্ত করছে।” – বলেছেন সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি। মামলার বিস্তারিত প্রকাশ্য না হওয়ার কারণে তিনি নিজের পরিচয় দিতে রাজি হননি।
টুগেদার উই ফাইট সোসাইটি ভারতের পশ্চিমে অবস্থিত রাজস্থান রাজ্য ভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ভারতীয় ভোক্তা ও স্টার্টআপের স্বার্থ সংরক্ষণে মামলা করেছে তারা।
গত বছরের শেষের হিসেব অনুসারে, ভারতে মোট ৫২ কোটি স্মার্টফোনের মধ্যে অ্যাপলের আইওএস চালিত ফোন রয়েছে মাত্র দুই শতাংশ। বাকি স্মার্টফোনগুলো অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম চালিত। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে ভারতে মার্কিন স্মার্টফোন ‘বেজ’ দ্বিগুণ হয়েছে।
এ সপ্তাহেই নতুন এক আইনে অনুমোদন দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার আদালত। ওই বিলটির বদৌলতে গুগল এবং অ্যাপল নিজ লেনদেন প্রক্রিয়া সফটওয়্যার নির্মাতাদের উপর চাপিয়ে দিতে পারবে না। দক্ষিণ কোরিয়ার পদক্ষেপের পরপরই সামনে এলো ভারতের মামলার খবরটি।