১০ বছর আগে অ্যাপ স্টোর উন্মোচন করে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল। ব্র্যান্ডভ্যালু বিবেচনায় বিশ্বে প্রিমিয়াম ফোনের এই এক নম্বর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ স্টোরে চলছে চীনাদের আধিপত্য! গুগলের চীন-প্রধান জানিয়েছেন, বর্তমানে অ্যাপ স্টোরে চীনা ডেভেলপারের সংখ্যা ২২ লাখ।
গত রোববার চীনে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল বিগ ডাটা ইন্ডাস্ট্রি এক্সপোতে চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার সঙ্গে কথা বলেন অ্যাপলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও গ্রেটার চায়নার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসাবেল জে মাহে। তিনি বলেন, অ্যাপ ডাউনলোড সংখ্যা ও রাজস্ব বিবেচনায় চীনা অ্যাপ ডেভেলপাররা এখন শীর্ষে। অ্যাপ স্টোরে সৃষ্টিশীলদের এক বিরাট কমিউনিটি তৈরি হয়েছে। অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে তাদের পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে। এদের অনেকেই এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ সফল ব্যক্তি।
এ সময় তিনি ভিডিও শেয়ারিংয়ের অ্যাপ টিকটকের কথা উল্লেখ করেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এ অ্যাপ চীনে দৌয়িন নামে পরিচিত। এছাড়া সৃষ্টিশীলতার দিক থেকে চীনের প্যালেস মিউজিয়াম অ্যাপ ডেভেলপার কোম্পানিকেও এগিয়ে রাখেন ইসাবেল।
অ্যাপ স্টোরে ডাউনলোডের দিক থেকে এখনকার সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ টিকটক। অন্তত চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের হিসাবে এমন চিত্রই উঠে এসেছে।
এ অ্যাপটির এখন ৭৫টি ভাষার সংস্করণ আছে এবং দেড় শতাধিক দেশ ও এলাকায় এটি ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া অ্যাপ ডেভেলপার কোম্পানি প্যালেস মিউজিয়ামের ১১টি অ্যাপ বিশ্বব্যাপী ৫০ লাখের বেশিবার ডাউনলোড করা হয়েছে।
তবে নিরাপত্তা ও শালীনতার প্রশ্নে টিকটক নিয়ে বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নানা আপত্তি করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি দেশে এরই মধ্যে এটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। টিকটক নিষিদ্ধ করা দেশের মধ্যে ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশ অন্যতম।
তবে সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে, চীন যেমন প্রযুক্তি পণ্যের বৃহৎ ভোক্তা, তেমনি প্রযুক্তিতে উদ্ভাবনেও বেশ এগিয়ে। চীনাদের তৈরি অ্যাপ থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পায় অ্যাপল। এ কারণে এশিয়ার এই সুপার পাওয়ারের দিকে মার্কিন জায়ান্ট অ্যাপলও বিশেষ নজর দিচ্ছে।
এর মধ্যে চীনের বেইজিং, শেনজেন, সাংহাই ও সুঝু শহরে গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র (আরঅ্যান্ডডি) স্থাপন করেছে। এ চারটি কেন্দ্রে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও সেবা নিয়ে উদ্ভাবনী কাজে নিয়োজিত আছেন অন্তত এক হাজার কর্মী। চীনের গুইয়াংয়ে প্রথম ডাটা সেন্টারও স্থাপন করছে অ্যাপল। চীনা গুইঝু ক্লাউড বিগ ডাটা কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে এ ডাটা সেন্টার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে গত মার্চে। এখানে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে অ্যাপল।