গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) ব্যবহার করা যায় এমন ডিভাইস হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। জিপিএস ২৪টি স্যাটেলাইটের সমন্বয়ে করা একটি পদ্ধতি। এগুলোর সাথে ঘড়ির সময় মেলানো বা সিনক্রোনাইজ করা।
যখন আপনার স্মার্ট ফোন জিপিএস ব্যবহার করে আপনার অবস্থান ম্যাপে খুঁজে বের করে, তখন এটা আসলে কোনো একটি স্যাটেলাইট থেকে সিগন্যাল গ্রহণ করে এবং সিগন্যাল পাঠানোর সময়ের ভিত্তিতে হিসেব করে।
স্যাটেলাইটের ঘড়িতে একটি এক মূহুর্তের হেরফের হয় তাহলে আপনি হয়তো আপনাকেই দুই/তিনশ কিলোমিটার দূরে হারিয়ে ফেলবেন।
তাই আপনি যদি সময়ের ভিত্তিতে সঠিক তথ্য চান তাহলে জিপিএসই আসলে সেই জায়গা।
এক সেকেন্ডের এক লাখ ভাগের এক ভাগের হেরফেরেও ঘটাতে পারে বড় বিপত্তি।
ব্যাংক পেমেন্ট, স্টক মার্কেট, বিদ্যুতের গ্রিড, ডিজিটাল টেলিভিশন- সবই নির্ভর করে বিভিন্ন জায়গায় সময়ের ওপর।জিপিএস এগুলোতে কাজ করতে ব্যর্থ হলে এর পরিণতি কতটা বড় আকারের হবে তা আসলে এখন কেউ ধারণাও করতে পারে না।
যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনী প্রথমে এর সমর্থন দিয়েছিলো কারণ এটা বোমা হামলা চালাতে সহায়তা করে। এমনকি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি নিশ্চিত হতে এটা সহায়তা করে। প্রথম জিপিএস স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হয় ১৯৭৮ সালে। প্রশ্ন হচ্ছে সামরিক কারণে জিপিএস গুরুত্বপূর্ণ হলেও যুক্তরাষ্ট্র কেনো অন্যদের এটি ব্যবহারের সুবিধা দিতে রাজী হলো? তাদের আসলে কিছু করার ছিলো না।
তারা স্যাটেলাইটের দুটি সিগন্যাল পেতে চেয়েছিলো-একটি তাদের নিজেদের ব্যবহারের জন্য আর অন্যটি কম সক্ষমতার, সাধারণ নাগরিকদের জন্য। কিন্তু কোম্পানিগুলো পরেরটিতেই দক্ষতার সাথে কাজ করে যা অর্থনীতিকেও চাঙ্গা করে তোলে।
২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন হাই গ্রেড সিগন্যালকে অন্যদের জন্য সহজলভ্য করেন। বস্তুতপক্ষে জিপিএস একমাত্র গ্লোবাল নেভিগ্যাশনাল স্যাটেলাইট সিস্টেম নয়।
রাশিয়ারও এ ধরণের একটি পদ্ধতি আছে যার নাম গ্লোনাস। যদিও এটা খুব একটা ভালো মানের নয়। চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও নিজস্ব প্রকল্প আছে। জাপান ও ভারতও এগুলো নিয়ে কাজ করছে।
এসব বিকল্প স্যাটেলাইট জিপিএসের সমস্যা নিরসনে সহায়তা করতে পারে। তবে এটি সামরিক সংঘাতও বাড়াতে পারে।
এমনকি কল্পনা করতে পারেন একটি স্পেস ওয়ারের।
স্যাটেলাইট পরিচালনায় ভূমি ভিত্তিক বিকল্পও আছে। এর প্রধানটির নাম ইলোরান। কিন্তু এটি সারা বিশ্বে কাজ করে না।
তবে মানুষ চায় এগুলোর উদ্বেগজনক কাজে ব্যবহার কিভাবে কমানো যায়।